ঘরে বসে বিরক্ত, বারান্দায় দৌড়ালেন ৪২ কি.মি. ম্যারাথন
মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে গৃহবন্দী সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশের মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনাই দেয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার পক্ষ থেকে। যা মানার চেষ্টা করছে সবাই।
কিন্তু এমন টানা কয়দিনই বা গৃহবন্দী থাকা যায়? একঘেয়েমি আর বিরক্তিবোধ চলে আসাই স্বাভাবিক। তা কাঁটাতে অভিনব এক পদ্ধতিই বের করেছেন বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাসরত দক্ষিণ আফ্রিকান দম্পতি।
নিজেদের এপার্টমেন্টের বারান্দাকে বানিয়েছেন ম্যারাথন রেস ট্র্যাক, সেখানেই দৌড়েছেন পুরো ৪২.২ কিলোমিটার পথ। ভাবছেন, বাড়ির বারান্দায় আবার ৪২ কিমি. পথ দৌড়ানো যায় কী করে?
এর অভিনব সমাধানই বের করেছেন কলিন অ্যালেন ও হিল্ডা দম্পতি। প্রথমে মেপে দেখেছেন বারান্দার দৈর্ঘ্য ২০ মিটার। তাই ম্যারাথন দৌড় সম্পূর্ণ করতে ২০ মিটার এই বারান্দায় ২১শ চক্কর দিয়েছেন কলিন ও হিল্ডা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে নিজেদের এই অভিনব ম্যারাথনে সকল আপডেট সরবরাহ করেছেন কলিন। যেখানে পোস্ট করা স্টপওয়াচে দেখা যাচ্ছে, ৪২ কিমি ম্যারাথন দৌড়াতে ৫ ঘণ্টা ৯ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড লেগেছে তাদের।
সফলভাবে এই ম্যারাথন শেষ করে বিজয়ীর হাসি নিয়েই একটি ছবি পোস্ট করেছেন কলিন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ আমরা করে দেখিয়েছি। বারান্দা ম্যারাথন সফল হয়েছে।’
এই দম্পতির ১০ বছর বয়সী জিনা বারান্দা ম্যারাথনের পরিচালকের ভূমিকায় ছিলেন। যে কি না দৌড়ের ফাঁকে ফাঁকে পানি, খাবার, তোয়ালে সরবরাহ করার পাশাপাশি অনুপ্রেরণামূলক গান বাজিয়েছে বাবা-মায়ের জন্য। একইসঙ্গে ৫ কিমি দৌড়েছে ছোট্ট জিনাও।
কিন্তু কেন এই বারান্দা ম্যারাথন? করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন অবস্থায় এমন পাগলামির পেছনের বৃহৎ স্বার্থটাই কী? সংবাদ সংস্থার এমন প্রশ্নের জবাবে দারুণ এক বার্তাই দিয়েছেন কলিন। জানিয়েছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বারান্দা ম্যারাথনকে বৈশ্বিক রুপ দেয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।
কলিন বলেন, ’করোনা আতঙ্কে থাকা মানুষদের নতুন কিছু চিন্তা করানোর জন্যই এই চেষ্টা। এর পরবর্তী পদক্ষেপে সারা বিশ্বকে নিয়ে আরও বড় দৌড়ের পরিকল্পনা করছি। বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে যেসব মানুষেরা এখন নিরাপত্তার জন্য ঘরে বসে থাকলেও, যারা নিজেদের ব্যস্ত রাখতে চান, তাদের জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বারান্দা ম্যারাথনের উদ্দেশ্য, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে ফের যোগাযোগ গড়ে তোলা। কারণ করোনা সংক্রমণের ভয়ে এখন সবাই সব কিছু ভুলে কেবল রোগটি নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছে।’
এসএএস/পিআর