বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায় কমেছে


প্রকাশিত: ০১:২০ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৫

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৬৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

জানা গেছে, বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। কলকাতা থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় মাল আনা যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। আর সে কারণে আমদানিকারকরা এ পথে আমদানি করতে চাইলেও কাস্টমস ও বন্দরে হয়রানি, শুল্ক ফাঁকি, চোরাচালানরোধসহ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি হবে বলে মনে করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

দেশের চাহিদার অধিকাংশ পণ্যই এই স্থলপথে আমদানি-রফতানি হয়ে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমতে শুরু করেছে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া, শুল্ক ও জরিমানা আদায় করা, প্রতিটি কেমিকেল পণ্য টেস্টে পাঠানো, দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগস্টে ২৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ২০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

কাস্টমস সূত্র জানান, শূন্য শুল্কহারের মালামাল বেশি আমদানি হওয়া, উচ্চ শুল্কের হারের পণ্য কম আমদানি হওয়ায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। ঈদসহ অন্যান্য ছুটির কারণে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আগামীতে এই ঘাটতি থাকবে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, কতিপয় কাস্টমস কর্তাদের অহেতুক হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এছাড়া সপ্তাহে দুই একদিন অনলাইন সিস্টেম বিকল, শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করানোর কারণেও ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায় চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। হয়রানি, বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাবিকৃত ক্লিয়ারিং হাউস চালু হলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কয়েকগুণ বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, রাসায়নিক পরীক্ষা ও আমদানিকৃত পণ্যের ওপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত লোড না চাপালে রাজস্ব আদায় বাড়বে কয়েকগুণ। সবার আন্তরিকতা থাকলে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান জানান, এ বন্দর দিয়ে কাঁচা ফলমূল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ, বেনাপোল স্থলবন্দরের নানা বিড়ম্বনা, অনৈতিক সুযোগ গ্রহণ, ইক্যুইপমেন্ট সমস্যা, চুরিরোধসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়লে আমদানি-রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে রাজস্ব আদায়ও।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত ছাড়া রাজস্ব আদায় সম্পর্কে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

জামাল হোসেন/এসএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।