ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী
বহুল প্রতীক্ষিত কাজিরবাজার সেতুর পাশাপাশি ৪৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত সেতু উদ্বোধন ও উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
সড়ক বিভাগ সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, সালুটিকর-ভোলাগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার মালবাহী ট্রাক চলাচল করে। দেশের অবকাঠামোর প্রায় ৭০ ভাগ পাথর ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী থেকে সাপ্লাই দেয়া হয়। এছাড়াও ভোলাগঞ্জ স্থল বন্দর দিয়েও মালামাল আনা নেয়া হয়। সড়কে এক্সেল লোড না থাকায় প্রতি ট্রাকে ৩০ টনের অধিক পাথর বহন করায় এই সড়কটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে।
সড়কটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির লক্ষে সড়ককে জেলা সড়ক থেকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টার সেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এ লক্ষ্যে ৪৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি গত ৭ এপ্রিল অনুমোদন দেয় একনেক। এরপর নানা প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সড়ক বিভাগ। ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
আগামী তিন বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি অর্থ বছরে বরাদ্দ এসেছে ৬০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩১ দশমিক ৭৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের ১৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সড়ক ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট (বিটুমিন) দিয়ে নির্মাণ করা হবে।
বাকি ১৩ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে রিজিড পেভমেন্ট বা কংক্রিট দিয়ে। নির্মাণ করা হবে ২ স্পেনের ৭৫ দশমিক ২৪ মিটার দৈর্ঘের একটি সেতু। নতুন করে নির্মাণ করা হবে দুটি কালভার্ট। নির্মাণ করা হবে ২৯ দশমিক ৩৫২ বর্গমিটার সারফেস ড্রেন।
এছাড়াও এক লাখ ২২ হাজার ২শ বর্গ মিটার কংক্রিট স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ করা হবে। থাকবে একটি ইন্টারসেকশন ও ছয়টি বাস-বে। এছাড়াও নির্মাণ করা হবে একটি টোল প্লাজা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিতব্য প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সম্পন্ন হবে।
সওজ সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, চার লেন সড়ক প্রকল্প কাজের গতি ত্বরান্বিত হবে। ভোলাগঞ্জ স্থল বন্দর হয়ে আন্ত:রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য ও কম সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা যাবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ইউসিসি লি. এর চেয়াম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, বর্তমানে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের অবস্থা একেবারেই নাজুক, যান চলাচলের অনেকটা অনুপযোগী। প্রায় পুরো সড়ক ভাঙাচোরা বিধ্বস্ত। সড়কের স্থানে স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের।
তিনি আরো বলেন, এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও সরেজমিন কাজ শুরু হতে আরো বেশ সময় লেগে যাবে।
সড়ক বিভাগ সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবির জানান, সিলেট-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পন্নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তিন বছরের মধ্যেই এটির কাজ শেষ হবে।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি