হোসি হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় জাপান
বাংলাদেশে নিজ দেশের নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাপান। সোমবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিহিদে সুগা এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, জাপান সরকার হোসি হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায়। বার্তা সংস্থা এপি সূত্রে খবরটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
সংবাদ সম্মেলনে ইয়োশিহিদে সুগা বলেন, এমন কাপুরুষোচিত কর্মকাণ্ড বার বার ঘটতে দেয়া যায় না। এমন ঘটনায় আমি ক্ষুব্ধ। একই সঙ্গে তিনি নিহত কুনিও হোসির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন, আমরা এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ইতালির এনজিও কর্মী সিজার তাভেলা হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শনিবার রংপুরে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন হোসি। এ ঘটনায় জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এপিকে জানান, এটা একেবারেই ভিত্তিহীন। দেশে কোনো আইএস নেই। থাকতে পারে না। রোববার তিনি বলেন, আইএস কেন এখানে থাকবে? দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আইএস হামলা চালিয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সন্দেহজনক। আমরা বিষয়টি যাচাই করছি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আইএস সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। রোববারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কেউ অনলাইনে কিছু পোস্ট করল, কেন আমরা কোনো প্রমাণ ছাড়া তা মেনে নেব? আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
এদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার প্রধান রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামী দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে বলে তাদের দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিএনপির এক মুখপাত্র (ড. আসাদুজ্জামান রিপন) প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ প্রত্যাখান করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য দুঃখজনক।
যদিও কুনিও হোসিকে হত্যার পর আইএস এ হত্যার দায় স্বীকার করে একটি বিবৃতি দিয়েছে। নিজের ওয়েব সাইটে এমন দাবি করেছে ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ। এ গ্রুপটি জিহাদি সংগঠনগুলোর অনলাইন পোস্টগুলো অনুসরণ করে থাকে।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ আইএসের দাবির পক্ষে যে তথ্য দিয়েছে তা নিরপেক্ষ কোন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে সিজার তাভেলাকে হত্যার দায়ও স্বীকার করেছিল আইএস।
এপি আরও লিখেছে, ইসলামপন্থি গ্রুপগুলোর সহিংসতা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বেড়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশ। এ বছর চার ব্লগারকে হত্যার পর নিষিদ্ধ করা হয়েছে কয়েকটি সংগঠনকে।
এসএইচএস/এমএস