মুন্নার কি অপরাধ
প্রতিপক্ষের হামলার হাত থেকে পিতাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত শিশু মুন্না এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মুন্না গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের হালিম শেখের ছেলে।
জানা গেছে, তারাশী গ্রামের কালু শেখের ছেলে জাবের শেখ তারাশী সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ ছাড়ে। খালে বাঁধ দেবার কারণে পানি পঁচে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর এ ঘটনায় ওই গ্রামের জয়নাল শেখের ছেলে হালিম শেখসহ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাবের শেখ তার লোকজন নিয়ে বুধবার তারাশী বাসস্ট্যান্ডে হালিম শেখের উপর হামলা চালায়।
এ সময় প্রতিপক্ষের হাত থেকে পিতাকে বাঁচাতে মুন্না (১১) এগিয়ে আসে। এ সময় হামলাকারীরা মুন্নাকেও বেদম মারপিট করে। এ মারপিটে মুন্না ও তার পিতা হালিম শেখ গুরুতর আহত হয়। আহত বাবা-ছেলেকে প্রথমে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে মুন্নার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে মুন্নাকে শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে তার পরিবার।
মুন্না বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ২০১নং ওয়ার্ডের ১৯৩নং বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। শিশু মুন্নাকে মারপিটের কারণে এলাকাবাসীসহ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছে। তারা প্রতিদিন মুন্নার উপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে রোববার মুন্নার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোটালীপাড়া পাবলিক ইনস্টিটিউশনের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় চত্বরে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপি চলা মানববন্ধন কর্মসূচিতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সাদী মোহাম্মদ, ইফাজ রহমান সজিব, অভি শিকদার, সজিব শেখ, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র স্বচ্ছ শীল বক্তব্য রাখেন। মুন্না কোটালীপাড়া পাবলিক ইনস্টিটিউশনের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
এদিকে, মুন্না ও তার বাবা হালিমকে মারপিটের ঘটনায় হালিম শেখের ভাই সেলিম শেখ বাদী হয়ে জাবেরসহ ১১ জনকে আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
কোটালীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং এক আসামিকে গ্রেফতারও করা হযেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এস এম হুমাযূন কবীর/এআরএ/আরআইপি