হবিগঞ্জে কথিত জিনের বাদশা গ্রেফতার


প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

হবিগঞ্জে কথিত এক জ্বিনের বাদশা আতিউর রহমানকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিতলের মূর্তি ও সোনালী রঙের কিছু অলঙ্কার উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে কৌশলে ফাঁদে ফেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত বাদশা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুকানুপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে আতিউর রহমান (২২)।

পুলিশ জানায়, তিনি দীর্ঘদিন থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ভয় দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের একটি চক্র রয়েছে। চক্রটি মানুষকে জিনের ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মালামাল হাতিয়ে নেয়। তিনি ওই চক্রের এক অন্যতম সদস্য।

সম্প্রতি চক্রটির সদস্যরা বাহুবল উপজেলার কাইতগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী সেলিম খানের স্ত্রী রাণী খানকে রাতে মোবাইল ফোনে ভয় দেখাতে থাকে। অত্যন্ত কৌশলে তার সঙ্গে প্রতারণার ছক আঁকে। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার আতিউর একটি মূর্তি নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় আসে। এর আগে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য রাণীকে তার সব স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসতে বলা হয়।

বিষয়টি রাণী সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ সেখানে সাদা পোশাকে অবস্থান নেয়। রাণী স্বর্ণালী রঙের ধাতব পদার্থের কিছু নকল স্বর্ণের অলঙ্কার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। এরপর বেলা দেড়টার দিকে তিনি রাণীর সঙ্গে টার্মিনালের একটি অংশে গাড়ির পেছনে নির্জন স্থানে দেখা করতে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আতিউর জানায়, তিনি চট্টগ্রামে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার পার্শ্ববর্তী গ্রাম কাপাশিয়ার শামীম (৩০) এ প্রতারণার ছক তৈরি করেছে। প্রায় ১৫ দিন ধরে তার সঙ্গে ওই মহিলার কথা চলছে। ইতিমধ্যে শামীম ওই মহিলার নিকট থেকে সাত হাজার টাকা নিয়েছে। মঙ্গলবার সেই তাকে একটি পিতলের মূর্তি দিয়ে ওই মহিলার কাছে পাঠিয়েছে। বলেছে মূর্তিটি ওই মহিলাকে দিয়ে যেতে।

প্রতারণার শিকার ইতালি প্রবাসী রাণী খান জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে তিনি দেশে আসেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে প্রথমে তার মোবাইল ফোনে কে একজন ফোন করে। শুরুতেই নানান রকম দোয়া-দরুদ পড়তে থাকে। অনেক ছুরা পড়ে। এক পর্যায়ে সে নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেয়। বলে তার কথা না শোনলে সন্তানের ক্ষতি হয়ে যাবে। সে মারা যাবে।

এ ব্যাপারে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত প্রতারককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার অন্য সহযোগীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা হচ্ছে। অবিলম্বেই প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।