ক্যাসিনো কাণ্ড : প্রিমিয়ার লিগে খেলতে পারবে তো মোহামেডান-আরামবাগ?
পাঁচদিন পর শুরু হবে ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দলবদল। ১ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত হবে স্থানীয় ও বিদেশি ফুটবলারদের রেজিস্ট্রেশন। প্রশ্ন হলো, আদৌ কি এ সময়ে দলবদল শুরু হবে? হলেও এই দলবদলে অংশ নিতে পারবে কি অন্যতম দুই ক্লাব মোহামেডান এবং আরামবাগ?
প্রশ্নগুলো আসাটা স্বাভাবিক। ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো উচ্ছেদের পর বদলে গেছে খেলাধুলার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই এলাকার চিত্র। এর মধ্যে মোহামেডান ও আরামবাগ- প্রিমিয়ার লিগের এই দুই ক্লাবের অবস্থা বেশি শোচনীয়।
দীর্ঘদিন ধরে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব পরিচালনায় প্রধান ভূমিকা থাকা ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া আটক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি, স্থানীয় কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ দেশের বাইরে। এ অবস্থায় ক্লাব দুটি দলবদলে অংশ নেবে কীভাবে?
দুই ক্লাবের পরিচালনার ধরন দুই রকম। মোহামেডান ক্লাব ‘লিমিটেড’ হয়েছে বছর দশেক আগে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্লাবটি পরিচালিত হয় পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে। তবে পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ক্লাবটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ বলতে গেলে এক হাতেই ক্লাব দেখভাল করেছেন।
এখন ক্যাসিনো ইস্যুতে লোকমান হোসেন ভুঁইয়া আটক হওয়ার পর পরিস্থিতি মোড় নিয়েছে ভিন্ন দিকে। দলবদলের কি হবে তার জবাব দেয়ার মতো কেউ নেই। দু-একজন কাউকে পাওয়া গেলেও তারা নিজ পরিচয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতির মতো সাধারণ সম্পাদকও দেশের বাইরে। যে কারণে কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দলবদলের বিষয়ে গতকাল তারা কয়েকজন একসঙ্গে বসেছিলেন অন্য একটি জায়গায়। কারণ, ক্লাবে তো আর যাচ্ছেন না কেউ। সে সুযোগও নেই।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক দলবদল নিয়ে বসছিলেন উল্লেখ করলেও ক্লাবের অন্য সূত্র আভাস দিয়েছে, এবার ফুটবল দল গঠন না করার শঙ্কাও আছে। কারণ, তারা যেসব ফুটবলারকে নতুন মৌসুমের জন্য টোকেন মানি দিয়েছে, তাদের এখন দলে নেয়াই কঠিন হবে। কারণ এত টাকা এখন কোত্থেকে আসবে, কে দেবেন? কারণ, ক্লাব কর্মকর্তাদের দাবি, তারা ইনডোর গেমের মাধ্যমে দিনে যে ৪০ হাজার টাকার মতো পেতো সেটাই ছিল তাদের আয়ের বড় একটা অংশ।
আরামবাগ ক্লাবে তালা ঝুলছে। মোহামেডানের ক্যাসিনো হল সিলগালা হলেও ক্লাবের অফিসসহ বড় অংশ খোলা; কিন্তু কর্মকর্তাদের কেউ আসছেন না। ক্লাবের সাবেক এক ফুটবলার বলেন, ‘এমনিতেই খেলোয়াড় সংগ্রহে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল মোহামেডান। এখন ক্লাবের এমন পরিস্থিতিতে সম্মানের যেমন হানি ঘটেছে, তেমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দলবদল। জানি না এবার মোহামেডানের দল গঠন করা হবে কি না।
এক স্থায়ী সদস্য বলেন, ‘দলবদল তো চলবে দেড় মাসেরও বেশি সময়। দেখি না পরিস্থিতি কি হয়। ক্লাবের পরিচালকরা আছেন তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আরআই/আইএইচএস/এমএস