ভবিষ্যতে বিশ্ব মাতাবে টেন-১০ ফরম্যাট
টেস্ট ও ওয়ানডের সাথে সংক্ষিপ্ত ভার্সন টি-২০ ফরম্যাট বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটকে আনন্দ জোগাচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে আরো একটি ফরম্যাট বিশ্ব ক্রিকেটকে আরও অনেক বেশি আনন্দ জোগাবে বলে মনে করেন ভারতের সাবেক উইকেটরক্ষক সৈয়দ কিরমানি। আর সেটি হলো, টেন-১০ ক্রিকেট।
তার মতে, ‘তিন ফরম্যাটই বিশ্ব ক্রিকেটে ভালোভাবেই জায়গা করে নিয়েছে। ভবিষ্যতে দশ ওভারের টেন-১০ ক্রিকেট চালু হলেও, বিশ্ব ক্রিকেটে আরও অনেকগুন আনন্দ দিবে।’
১৮৭৭ সালে প্রথম টেস্ট ম্যাচের আর্বিভাব ঘটে। এরপর যতই দিন গড়িয়েছে, টেস্ট ক্রিকেটের মর্যাদা ততই বেড়েছে। পাশাপাশি ওয়ানডে ক্রিকেট চলে আসায়, টেস্টের সাথে সীমিত ওভারের ক্রিকেটও বিশ্বকে মাতিয়েছে।
টেস্ট ও ওয়ানডের সাথে বিংশ শতাব্দিতে নতুন ফরম্যাটের আর্বিভাব ঘটে। তা’হল- টুয়েন্টি টুয়েন্টি (টি-২০)। ধুমধারাক্কা এই ফরম্যাট অতি দ্রুতই ক্রিকেটের মানচিত্রে এবং ভক্তদের মনে ভালোভাবেই জায়গা করে নেয়। সেই সাথে বিজ্ঞাপনের বাজারে এই ফরম্যাট লাভজনক ব্যবসা হিসেবে প্রচারণাও পায়।
কারো কারো মতে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বর্তমানে সমানতালেই চলছে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০। তাই অদূর ভবিষ্যতে এই তিন ফরম্যাটের সাথে টেন-১০ ক্রিকেট যোগ হলে ক্রিকেটের জৌলুস আরও বাড়বে বলে মনে করেন কিরমানি।
তিনি বলেন, ‘টেস্ট ও ওয়ানডে দারুনভাবে ক্রিকেটের জৌলুস বাড়িয়েছে। ঠিক তেমনি মানুষের মনে আনন্দও দিয়েছে শতভাগ। আর টি-২০ ফরম্যাট আসার পর সেই আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায় আরও বহুগুন। এমন অবস্থায় দশ ওভারের ম্যাচ শুরু হলে ক্রিকেটের জৌলুস আরও অনেকখানি বেড়ে যাবে। যেটা হবে অনেক বেশি আনন্দায়ক।’
শুধুমাত্র আনন্দ বা জৌলুসই নয়, এমন ফরম্যাটের আর্বিভাব ঘটলে ব্যবসায়িক প্রসার বিশ্বব্যাপী আরও বেশি প্রসারিত হবে। আর এটি হবে ক্রিকেটের উন্নতির আরও একটি মাধ্যম।
কিরমানি মনে করেন, ‘টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০-’র কারণে ব্যবসায়িক প্রসার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথম তিন ফরম্যাটের সাথে টেন-১০ ক্রিকেট যুক্ত হলে ক্রিকেটের জন্যই তা ভালো হবে। ক্রিকেট জগতে অনেক বড় একটা পরিবর্তন ঘটবে।’
টি-২০ ফরম্যাটের কারণে ক্রিকেটের আসল টেকনিকই ভুলে গেছেন খেলোয়াড়রা, এমন মন্তব্য অনেক বিশেষজ্ঞদের। তবে টেন-১০ ফরম্যাটের প্রদার্পন ঘটলে খেলোয়াড়দের টেকনিকের কি দাঁড়াবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে কিরমানি বলেন, ‘ভক্তরা ম্যাচের ফল দেখতে চায়, এটাই এখন মুখ্য। তাই ব্যাটিং, বোলিং, উইকেট কিপিং বা ফিল্ডিং-এ টেকনিক পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা গেল কি-না এটা আসল বিষয় নয়। তবে এটি স্কুলে পড়া খেলোয়াড়দের জন্য উপকারী ফরম্যাট নয়। যখন একজন ক্ষুদে খেলোয়াড় ক্রিকেটের পুরো টেকনিকটা অনুসরণ করে খেলবে, তখন সবাই তাকে বাহবা দিবে। তাই টেন-১০ ফরম্যাট হতে পারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও জনপ্রিয়।’
টেন-১০ ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের মানসিকতাতে পরিবর্তন আনতেও সক্ষম হবে বলে মনে করেন কিরমানি। তিনি বলেন, ‘টেন-১০ ক্রিকেটে কোচ না থাকলে, খেলা চালিয়ে নেয়া যাবে। কারণ এখানে দ্রুত রান তুলতে হবে। দ্রুত উইকেট তুলে নিতে হবে। এখানে টেকনিকের কোনো প্রয়োজন হবে না। আর যেহেতু টেকনিকের প্রয়োজন নেই, তাই বোলিং-ব্যাটিং বা অন্য কোনো কোচের প্রয়োজন নেই। স্টাফরা না থাকলে, খেলোয়াড়রা নিজেদের মত করে খেলা চালিয়ে যাবে। এতে তাদের মানসিকতারও পরিবর্তন হবে।’
ভারতের হয়ে ৮৮টি টেস্ট, ৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন কিরামানি। টেস্টে ব্যাট হাতে ২৭৫৯ রান করার পাশাপাশি উইকেটরক্ষক হিসেবে ১৬০ ক্যাচ ও ৩৮টি স্ট্যাম্পিং করেছেন তিনি। আর ওয়ানডেতে ৩৭৬ রানের পাশাপাশি ২৭টি ক্যাচ ও ৯টি স্ট্যাম্পিং করেছেন ৬৫ বছর বয়সী কিরমানি।
একে/পিআর