শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন : কঠোর আন্দোলনের ইঙ্গিত


প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঘোষিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর না হওয়া, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল গঠনে কমিশন ঘোষণা এবং শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব এখনো না আসায় দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। এসময় ঈদের পর লাগাতার আন্দোলনসহ ভর্তি পরীক্ষা বর্জনের হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এ কর্মবিরতি। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত স্থানে কর্মবিরতিও পালন করেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাবি শিক্ষক সমিতি। এসময় অর্থমন্ত্রীকে প্রধান করায় শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে অর্থমন্ত্রী ইতিপূর্বে শিক্ষকদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেছেন তার নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতি ঢাবি শিক্ষকদের কোনো আস্থা নেই। তাই আমরা এ কমিটি থেকে অর্থমন্ত্রীকে বাদ দেয়ার আহ্বান জানাই। নতুবা শিক্ষকরা এ কমিটির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসবেন না।

এদিকে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল সাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বেতন বৈষম্য কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা।

তারা বলেছেন, ‘অর্থমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমে শিক্ষকদের সম্পর্কে অসংলগ্ন ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান করেন এবং গত ১০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আবার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য রেখেছেন এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে তার এ ধরনের আচরণের কারণে তিনি ইতিমধ্যেই সকল স্তরের শিক্ষকদের নিকট গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। গণমাধ্যমে মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন, আমলাদের প্রতিনিধি। সুতরাং তার কাছ থেকে শিক্ষকরা সুবিচার পাবেন বলে আমরা মনে করি না।’

শিক্ষকরা আরো বলেন, ‘তবে আমাদের আস্থার জায়গা এই যে, এই কমিটিতে জনবরেণ্য ও নির্ভর করার মতো জন প্রতিনিধি আছেন, যারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দেশকে অগ্রসর করে নেয়ার চিন্তা চেতনা ধারণ করেন। এমতাবস্থায় আমরা অর্থমন্ত্রীর স্থলে একজন সর্বজন গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধিকে কমিটির প্রধান করে অনতিবিলম্বে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে অনুরোধ জানাই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’

কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে দেশ গড়ার এ কারিগররা বলেন, ‘শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ পূরণের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ঈদের পর লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত এবং বিশ্ববিদ্যালগুলোতে প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষাও বাধাগ্রস্থ হতে পারে।’

এমএইচ/একে/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।