সরকারের কাছে ৮০ কোটি টাকা চেয়েছে হকি ফেডারেশন

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:২১ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৯

অনভিজ্ঞ এক বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল ইনডোর এশিয়া কাপ হকিতে। ঠিক ঢাল-তলোয়ারহীন সর্দারের মতো। গত মাসে থাইল্যান্ডের চুনবুরিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ার এই টুর্নামেন্টে অভিষেকেই বাংলাদেশ ১০ দেশের মধ্যে সপ্তম। যদিও এটা আশা জাগানিয়া ফলাফল।

ইনডোর হকি কি? নিয়মগুলোও জানা ছিল না জিমি-সিটুলদের। তারপরও তিনটি দেশের সামনে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। প্রথম অংশগ্রহণের ফলাফল দারুণভাবে আশা জাগিয়েছে। তাই তো বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন ইনডোর হকির উন্নয়নে নিয়েছে ব্যাপক পরিকল্পনা।

আগামীতে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক দুই পর্যায়েই নিয়মিত ইনডোর হকি খেলবে বাংলাদেশ। তাইতো হকি ফেডারেশনের প্রথম দরকার একটা ইনডোর স্টেডিয়াম। আর তা তৈরি করার উদ্যোগ শুরুও করেছে ফেডারেশনের নতুন কমিটি।

সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের পূর্ব অংশ ভেঙ্গে সেখানে ইনডোর স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করছেন তারা। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের টার্ফের পূর্ব পাশে বেশ কিছু জায়গা খালি। গ্যালারির পূর্ব পাশে বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের কার্যালয়।

‘মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের যে বিশাল গ্যালারি তা প্রয়োজন নেই। সর্বোচ্চ দুই পাশে গ্যালারি থাকলেই যথেষ্ট। আমরা স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশের পুরোটা এবং তার সামনে মাঠের খালি অংশ মিলিয়ে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করতে চাই। সেখানে ইনডোর সুযোগ-সুবিধার পাশপাশি কোচ-খেলোয়াড়দের আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারলে বছরজুড়ে ক্যাম্প করা যাবে। আসলে হকির উন্নয়নে একাডেমির বিকল্পন নেই। আমরা ইনডোরসহ ভবনটি করতে পারলে বয়সভিত্তক বিভিন্ন দলের ১২ মাস অনুশীলন ক্যাম্প করা যাবে’- বলেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ।

Hokey

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি আবদুর রশিদ শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘মওলানা ভাসানীতে আধুনিক ইনডোর স্টেডিয়ামসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি এবং কয়েকটি বিভাগীয় শহরে টার্ফ স্থাপন করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। ইতিমধ্যেই আমাদের পরিকল্পনা প্রস্তাব সরকারের কাছে প্রেরণও করেছি। সব মিলিয়ে আমাদের প্রয়োজন হবে ৮০ কোটি টাকার মতো। এই অর্থ বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে ফেডারেশন থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চিঠি দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সেই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে।’

ভবন, ইনডোর- এগুলো নির্মাণ নির্ভর করছে সরকারী বরাদ্দ পাওয়ার ওপর। এর বাইরে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন দেশের হকির উন্নয়নে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এই উপমহাদেশের অভিজ্ঞ কোচ ভারতের অজয় কুমার বানসালকে ১৫ দিনের জন্য উপদেষ্ট কোচ নিয়োগ দিয়েছে ফেডারেশন। ১৫ আগস্ট তার ঢাকায় এসে দায়িত্ব নেয়ার কথা। তিনি বাংলাদেশের কোচদের বুদ্ধি-পরামর্শ দেবেন।

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন চাইবে বানসালকে আরো লম্বা সময়ের জন্য পেতে। কারণ, আগামী বছরের অনূর্ধ্ব-২১ এশিয়া কাপ এবং এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য শক্তিশালী কোচিং স্টাফ তৈরি করতে যাচ্ছে ফেডারেশন। বানসালকে লম্বা সময়ের জন্য পেলে পুরো কোচিং স্টাফের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

‘অল্প দিনের জন্য হলেও বানসালকে উপদেষ্টা কোচ নিয়োগ দেয়াটা ভালোই হয়েছে। কারণ, তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন কোচ। তিনি আমাদের কোচদের অনেক ভালো গাইডলাইন দিতে পারবেন’- বলেছেন ফেডারেশনের সহসভাপতি আবদুর রশিদ শিকদার।

বিদেশি কোচিং স্টাফ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সহযোগিতা চেয়েছি। আমাদের কোচিং স্টাফে ২-৩ জন বিদেশি থাকবেন। জাতীয় দলের জন্য ইউরোপিয়ান কোচ হলে ভালো হয়। এশিয়ান হকি ফেডারেশনকে সেটাই বলেছি।’

আগামী বছর বাংলাদেশে দুটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হবে। এপ্রিলে হবে জুনিয়র এশিয়া কাপ এবং নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ‘সেপ্টেম্বরে এএইচএফ এর প্রতিনিধি আসবে ঢাকায়। তখন তাদের সঙ্গে দুটি টুর্নামেন্ট নিয়ে চুক্তি হবে। আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা নভেম্বর-ডিসেম্বরে করতে চাই। কারণ, তখন আবহাওয়া ভালো থাকবে’- বলেছেন এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ।

আরআই/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।