সুযোগটা ভালোই কাজে লাগালেন লিটন
তার ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন কারও নেই। অসাধারণ ব্যাটিং প্রতিভার অধিকারী। যে কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই জাতীয় দলে তিনি নাম লেখালেন আরও অনেককে পেছনে ফেলে। কিন্তু লিটন দাসের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট করতে নামলে কেন যেন কিছুটা খামখেয়ালি শট খেলতে থাকেন এবং খুব দ্রুত আউট হয়ে যান।
ধারাবাহিকতাহীন থাকার কারণে নিয়মিতও হতে পারেন না দলে। বারবার সুযোগ দেয়ার পরও ব্যাট করতে নেমে দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। এটা যেন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সেই লিটন যখন এশিয়া কাপের ফাইনালে একা লড়াই করে ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন, তখন তাকে বড় ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি দিতেই হয়।
ওই ইনিংসের ওপর আবারও নিষ্প্রভ লিটন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৮৩ রানের একটি ইনিংসছাড়া আর ভালো কোনো ইনিংস নেই। নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিন ম্যাচেই আউট হয়েছেন তিনি ১ রান করে। যে কারণে তাকে বিশ্বকাপের দলে রাখা হবে কি না তা নিয়েও বেশ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন নির্বাচকরা। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করেই তাকে নেয়া হয় বিশ্বকাপের দলে।
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এক ম্যাচে সুযোগ দেয়া হয়। সুযোগ পেয়েই ৭৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে ফেলেন তিনি। কিন্তু ইনফর্ম অন্য ব্যাটসম্যানদের বসিয়ে রেখে তো আর লিটনকে সুযোগ দেয়া যায়। যে কারণে ফাইনালে সুযোগ পেলেন না তিনি।
তবে কার্ডিফে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছিলেন ৭৩ রানের ইনিংস। তবুও বিশ্বকাপের প্রথম তিন ম্যাচে সুযোগ মিললো না লিটনের। অন্যদিকে ৫ নম্বরে ব্যাট করা মোহাম্মদ মিঠুন বারবার শুধু ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। যে কারণে, শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিঠুন বাদ, সুযোগ মিললো লিটনের।
কিন্তু তিনি তো ওপেনার। তাহলে তার ব্যাটিং পজিশন কী হবে? তামিম ইকবালের সঙ্গে সৌম্য সরকার ইনিংস ওপেন করছেন। তিন নম্বর সাকিব আল হাসান। এরপর মুশফিক। পাঁচ নম্বর পজিশনটি ছিল খালি। সেটা মিঠুনের। ওই জায়গাতেই ব্যাট করার সুযোগ মিললো লিটনের।
নিজের পছন্দমতো পজিশন নয় এবং দলের প্রয়োজনে যেকোনো পজিশনেই খেলতে প্রস্তুত থাকা জরুরি। লিটন কুমার সেই পজিশনেই ব্যাট করার সুযোগ পেলেন এবং প্রথম সুযোগকেই কাজে লাগালেন তিনি। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ১৮৯ রানের অসাধারণ এক জুটি গড়ে সহজ জয়ই উপহার দিয়েছেন তিনি বাংলাদেশকে।
১১২ মিনিট উইকেটে থেকে ৬৯ বল মোকাবেলা করেন লিটন। ৮টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মেরেছেন ৪টি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৯৪ রানে। লিটনের আফসোস এখানেই। ক্যারিবীয়রা আর কিছু বেশি রান করলে হয়তো সেঞ্চুরিটা পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু ৬ রান কম নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো লিটন দাসকে।
আইএইচএস/বিএ