চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা


প্রকাশিত: ০৭:১৮ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে মেহেদি হাসান বাদল (৩৫) নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাদল নগরীর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ নেতা বাদলকে পিছন দিক থেকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদলকে মৃত ঘোষণা করেন। নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত বাদল মহানগর যুবলীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এ ছাড়া সে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক, শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসিবেও পরিচিত ছিল।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) দীপক জ্যোতি খীসা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেহেদি হাসান বাদল একা পায়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন। বাসার গেইটের বাইরে কে বা কারা তাকে পেছন দিক লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে হত্যাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

মেহেদি হাসান বাদলের মৃত্যুর খবরে তার অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তারা শেরশাহ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ আশপাশের এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ বলেন, বাদলের লোকজন প্রথমে এলাকায় জড়ো হয়েছিল।  পরে সেখান থেকে হাসপাতালে চলে গেছে। সেখানে কিছুটা উত্তেজনা আছে। এলাকায়ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বাদল নগরীর বায়েজিদ এলাকার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি-ছিনতাই, ভূমি দখল, ইয়াবা ব্যবসাসহ পুরো অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে এলাকাবাসীদের অভিযোগ রয়েছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই এলাকার সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে। এর জের ধরে প্রায়ই সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আর প্রতিটি সংঘর্ষেই মেহেদি হাসান বাদলের নাম উঠে আসে গণমাধ্যমে।

বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর পলিটেকনিকসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বাদলসহ তার অনুসারীরা। আধিপত্যের জেরে এসময় তার বিরোধীদের সঙ্গে কয়েক দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

চসিক নির্বাচনের দু’দিন পর ৩০ এপ্রিল দুপুরে শেরশাহ কলোনি এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এরপর বাদল ও তার অনুসারী মিলিয়ে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে বাদল ও তার অনুসারীরা আবারো অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। শেষদিকে বাদলের অনুসারীরা ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা আদায়, জদি দখল এবং পাহাড় দখলের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল বলে জানান পুলিশ।

বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।