বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি
উজানের ঢলে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে শনিবার সকাল থেকে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুরে ৩ সেন্টিমিটরি কমে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, শুক্রবার বিকেলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হলেও শনিবার সকাল থেকে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
এলাকাবাসী জানায়, উজানের ঢলের কারণে তিস্তা ব্যারাজের ২০ কিলোমিটার উজানে তিস্তা নদী দুটি চ্যানেলে রূপান্তর হয়েছে। মূল চ্যানেল কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট ছাড়াও টেপাখড়িবাড়ির চরখড়িবাড়ি দিয়ে তিস্তা নতুন চ্যানেলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। তিস্তা অববাহিকার ২৫টি গ্রামের ৫ সহস্রাধিক পরিবারে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
তিস্তার বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলা। এ সকল উপজেলার বাইশপুকুরচর, কিসামত ছাতনাই, ঝাড়শিঙ্গেরশ্বর, বাঘেরচর, টাবুর চর, ভেন্ডাবাড়ি, ছাতুনামা, হলদিবাড়ী, একতারচর, ভাসানীর চর, পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, কৈমারী ও লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার তিস্তা অববাহিকার গ্রামগুলোর কাচা ঘরবাড়ি বন্যার পানির পানি প্রবেশ করেছে।
খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান আলী জাগো নিউজকে জানান, তাদের গ্রামের প্রতিটি পরিবারের ঘর হাটু পানির নিচে রয়েছে। ঘরের ভেতর দিয়ে সমান স্রোত বয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম বাইশপুকুর থেকে পূর্ব বাইশপুকুরের ৪ কিলোমিটার বালুর বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে পূর্ব বাইশপুকুর, পশ্চিম বাইশপুকুর, সতিঘাট, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়িসহ ১০টি গ্রামের কয়েক শত বাড়িসহ সহস্রাধিক বিঘা আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জাগো নিউজকে বলেন, তার এলাকার পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিখন জাগো নিউজকে জানান, কিছামত ছাতনাই চরের ২শত পরিবারের বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, উজানের ঢলে তিস্তার পানি শনিবার সকাল ৬ টায় বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট খুলে রাখা হয়েছে। দুপুর ১২ টায় পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জাহেদুল ইসলাম/এসএস/আরআইপি