আলোচনায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ৫ কাউন্সিলর

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:৫০ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনো। নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশনের নির্দেশের পর এক দফা সময় বাড়িয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন গঠনতন্ত্র ও হালনাগাদ করা কাউন্সিলর তালিকা জমা দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে।

দেশের তৃতীয় প্রধান এই ফেডারেশনের নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশনের প্রধান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মো. শাহ আলম সরদার মঙ্গলবার জাগো নিউজকে বলেছেন, মার্চের শেষ কিংবা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে হবে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন। সহসাই তফসিল ঘোষণা হবে।

হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে কাউন্সিলর ৮৫ জন। এর মধ্যে আছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত ৫ জন। প্রতি নির্বাচনে এই ৫ কাউন্সিলরই চলে আসেন আলোচনার শীর্ষে। ২০১৩ সালে এক তরফা নির্বাচন হওয়ার প্রধান কারণ ছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত এই ৫ কাউন্সিলর। ৫ জনের ৩ জনই ছিল আবাহনী ঘরানার। দুই জন ছিলেন স্পন্সর হিসেবে। প্রতিবাদে একটি পক্ষ নির্বাচনই বর্জন করেছিল।

২০১৭ সালে স্থগিত হওয়া নির্বাচনের আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যে ৫ কাউন্সিলর মনোনীত করেছিল সেখানে আবাহনীর আবদুস সাদেক ও মোহামেডানের শফিকুল ইসলাম লিটুকে রেখে বাকি ৩ জন রেখেছিল স্পন্সর হিসেবে। অতীতের তীক্ত অভিজ্ঞতায় বিতর্কের উর্ধ্বেই রাখা হয়েছিল আলোচিত এই ৫ কাউন্সিলরের তালিকা।

আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোন ৫ জনকে কাউন্সিলর মনোনীত করবে, তা নিয়ে এবার আগেভাগেই আলোচনা শুরু হয়েছে। পক্ষপাতিত্বের উর্ধ্বে থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যাতে গ্রহণযোগ্যভাবে এই ৫ জনের নাম দেয় ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে সে দাবিও তোলা হয়েছে।

জাতীয় হকি দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় কামরুল ইসলাম কিসমত বলেছেন, ‘আমরা চাই দেশের চার প্রধান ক্লাব মোহামেডান, আবাহনী, ঊষা এবং মেরিনার্সের একজন করে প্রতিনিধি এবং একজন স্পন্সর হিসেবে কাউন্সিলর করুক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাতে কোনো বিতর্ক হবে না। বিতর্কমুক্ত না হলে আবার নতুন করে ঝামেলা তৈরি হবে। খেলা থেকে দূরে সরে থাকতে পারে বঞ্চিত ক্লাবগুলো।’

এই ৫ কাউন্সিলর নিয়ে কী ভাবছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ? মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘যেহেতু এই ফেডারেশনের নির্বাচনের জন্য কমিশন গঠন হয়ে গেছে তাই এ সব বিষয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। এই বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশন প্রধানের।’

হকি ফেডারেশনের নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশনের প্রধান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মো. শাহ আলম সরদার বলেছেন, ‘আমি এখনো কাউন্সিলর তালিকা হাতে পাইনি। তবে জেনেছি তারা পরিষদে তালিকা জমা দিয়ে গেছে। আমরা কমিশনের সবাই বসে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে থেকে কারা কাউন্সিলর হবেন সে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার চেয়ারম্যান মহোদয়ের (যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল)। তার সঙ্গে কথা বলেই আমরা নাম চূড়ান্ত করবো।’

অতীতে এই ৫ কাউন্সিলর নিয়ে অনেক বিতর্ক ও ঝামেলা প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মো. শাহ আলম সরদার বলেন, ‘আগে কী হয়েছে তা বলতে পারবো না। সবকিছু যাতে বিতর্কের উর্ধ্বে থাকে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখবো। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন নির্বাচনের মাধ্যমে ফেডারেশনগুলোকে আরো গতিশীল করতে। আমরা সুচারুভাবে সব দায়িত্ব পালন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই। তার প্রায় ৬ মাস পর গত বছর ১১ জানুয়ারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটি বিলুপ্ত করে গঠন করে অ্যাডহক কমিটি। সেই অনির্বাচিত কমিটি দিয়েই চলছে দেশের হকি।

আগের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েও রহস্যজনকভাবে তা বন্ধ করে দিয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ২০১৭ সালে ২৭ আগস্ট হওয়ার কথা ছিল হকির নির্বাচন। মনোনয়নপত্র বিক্রিও করেছিল এনএসসি। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমার আগে নির্বাচন স্থগিত করে দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

আরআই/এমএমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।