ফেলানী হত্যা মামলার শুনানি ৬ অক্টোবর
আগামী ৬ অক্টোবর বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যা মামলার রিটের শুনানির দিন ধার্য করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ফেলানী হত্যা মামলার ন্যায়বিচার চেয়ে বাবা নুর ইসলামের করা রিটের প্রেক্ষিতে এই শুনানির দিন ধার্য করা হয়। বুধবার বিকেলে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) পরিচালক কিরীটি রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ৮ জুলাই বাংলাদেশ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) নির্বাহী পরিচালক কিরীটি রায়ের কাছে ভারতের উচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করে তার বাবা নুর ইসলাম।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। এ ঘটনার পর বিএসএফের বিশেষ আদালতে অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ গঠন করে।
দুই বছর আট মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত। সেই রায় যথার্থ মনে করেননি বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দফায় গত ২ জুলাই বিএসএফের বিশেষ আদালত পুনরায় অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরু জানান, দুই দফা সাক্ষ্য দেয়ার পরও তার মেয়ের হত্যার ন্যায্যবিচার পাননি তিনি। তিনি এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার মতে অমিয় ঘোষের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তা না করে ভারতের বিএসএফ বিচারের নামে তামাশা করেছে। তাই ভারত সরকারের কাছে সঠিক বিচার পাওয়ার আশায় উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেন।
ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আবেদনপত্রে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম জানান, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি আমার কন্যা ফেলানী খাতুনকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানার ৯৪৭ নম্বর পিলারের কাছে বিএসএফ সদস্যদের কাছে গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার পর বিএসএফ তার আদালতে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ গঠন করে।
দুই বছর আট মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ রায় দেন বিএসএফের আদালত। সেই রায় যথার্থ মনে করেনি বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি রায় পুর্নবিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর গত ২ জুলাই বিএসএফ কোর্ট অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে পুনরায় রায় দেন।
এ রায়ে হতভম্ভ হয়ে পড়েন ফেলানীর বাবা। বিএসএফ অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করে। তারপরও নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় সবাই বিস্মত ও মর্মাহত হয়। এ ব্যাপারে ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থাকে (মাসুম) উচ্চ আদালতে মামলাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ করেন।
ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) নির্বাহী পরিচালক কিরীটি রায় জানান, ফেলানী হত্যার ন্যায্য বিচারের জন্য দিল্লির সুপ্রিম কোর্টে আমার মাধ্যমে নিহত ফেলানীর বাবা একটি আবেদন করেন। আবেদনে ফেলানী হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি এবং তার ক্ষতি পূরণের দাবি করা হয়েছে। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালত আগামী ৬ অক্টোবর মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, যেহেতু ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রিটটি শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন সেহেতু ন্যায় বিচার পাওয়ার দ্বার উন্মোচনের একটি বড় সুযোগ আমাদের হাতে এসেছে।
নাজমুল হোসেন/এআরএ/বিএ