ফেডারেশনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, ট্রফি নেবে না চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:০৯ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

গত বছর জুন মাসে হওয়া প্রিমিয়ার হকি লিগের অসমাপ্ত ম্যাচের ফলাফল ঘোষণা হয়েছিল পাঁচ মাস পর অক্টোবরে। তারও চার মাস পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রদান করা হবে সেই লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে ট্রফি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান ট্রফি নেবে না। বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্যালকন হলে। অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সাদাকালো শিবির।

গত বছর ৭ জুনের মোহামেডান-মেরিনার্সের ম্যাচটি ছিল ঘটনাবহুল। ৪৪ মিনিট পর দুই চাইনিজ আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র গন্ডগোল হলে ম্যাচ আর শেষ হয়নি। ৩০ অক্টোবর ওই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ঘোষণা করলে চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান। আর রানার্সআপ আবাহনী।

তারও প্রায় এক মাস পর গত ২৬ নভেম্বর হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সভায় শাস্তি দেয়া হয় মোহামেডান ও মেরিনার ইয়াংসের চার কর্মকর্তাকে। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে হকিতে নিষিদ্ধ করে ফেডারেশন। সঙ্গে জরিমানাও। ফেডারেশনের ওই সিদ্ধান্তের পরই হকিতে নেমে আসে অন্ধকার। সে ঝামেলা না মিটিয়েই ফেডারেশন চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।

মজার বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে যে আমন্ত্রণপত্র দেয়া হয়েছে সেখানে নিষিদ্ধ কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে না আসার কথা উল্লেখ আছে। আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে (হুবহু), ‘উক্ত অনুষ্ঠানে আপনার ক্লাবের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার ও আর্থিক অনুদান গ্রহণের জন্য সর্বমোট ১০ জনকে উপস্থিত থাকার জন্য বিনীত আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে উল্লেখ্য যে, ফেডারেশনের মাননীয় সভাপতি মহোদয়ের পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন কর্তৃক চলমান শাস্তিপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা/খেলোয়াড়কে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।’

আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা ১০ জনে নির্ধারণ করে দেয়া এবং আমন্ত্রণপত্রে শাস্তিপ্রাপ্তদের উপস্থিত না হওয়ার নির্দেশনা দেয়ার বিষয়টি মর্যাদায় লেগেছে চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের। এ বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেনি মোহামেডান। ট্রফি নেয়ার চিঠি পাওয়ার পর যেখানে চ্যাম্পিয়ন দলের আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার কথা সেখানে হয়েছে উল্টোটা। হকি ফেডারেশনের এ ধরনের চিঠিকে মর্যাদাহানিকর হিসেবে উল্লেখ করে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোহামেডান।

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘ফেডারেশন এ ধরনের আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আমাদের মর্যাদাহানি করেছে। আমরা এমন অনুষ্ঠানে যেতে পারি না।’

হকি দলে ২০ খেলোয়াড় ও কোচ-কর্মকর্তা মিলে থাকেন ২৪ জন। অথচ চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি আনতে যেতে হবে ১০ জনকে। হকি অঙ্গনের সবাই ফেডারেশনের এমন সিদ্ধান্তকে হাস্যকর হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অতিথি ১০ জনে বেঁধে রাখলে ক্লাব কাকে পাঠাবে অনুষ্ঠানে? যারা খেলে ক্লাবকে ট্রফি এনে দিলেন তারা ট্রফি আনতে যেতে পারবেন না?-এ প্রশ্ন এখন হকি অঙ্গনে। এই ২৪ জনের বাইরে ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, হকি কমিটির চেয়ারম্যান, সম্পাদক, লিগ কমিটিতে ক্লাবের প্রতিনিধিও আমন্ত্রণ পাওয়ার যোগ্য। অথচ ফেডারেশন বলেছে সর্বোচ্চ ১০ জন!

আরআই/এমএমআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।