ইসমাইল-জহিরদের সামনে দোহার হাতছানি

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:২৯ এএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

জাতীয় অ্যাথলেটিকস থেকে ‘রেকর্ড’ শব্দটি যেন উঠেই গিয়েছিল। রেকর্ড বইয়ে পুরনো নামগুলোই জ্বলজ্বল করছিল বহুদিন ধরে। গোলাম আম্বিয়া, মাহবুব আলম, মিলজার হোসেন, মোস্তাক আহমেদ, শর্মিলা রায়, ফৌজিয়া হুদা জুঁই, নাজমুন্নাহার বিউটি ও নেলী জেসমিনরা এখনো দখল করে আছেন রেকর্ডের খাতা।

বছর যায়, অ্যাথলেটিক হয়। কিন্তু পুরনো রেকর্ড ভাঙ্গা হয়না বর্তমানের কোনো অ্যাথলেটের। এ নিয়ে অ্যাথলেটিকস অঙ্গনে দীর্ঘশ্বাস। এবার অনন্ত স্বস্তি ফিরেছে ‘মাদার অব গেমস’ খ্যাত এ খেলাটিতে।

শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেষ হওয়া তিন দিনব্যাপী ৪২ তম জাতীয় অ্যাথলেটিক উপহার দিয়েছে কিছু নতুন মুখ। ৬ জন অ্যাথলেট টপকেছেন বিভিন্ন সময়ের টাইমিং। আশার সুর স্টেডিয়াম পাড়ায়। অ্যাথলেটিকসে বুঝি আবার সুদিন ফিরছে। ৬ বছর পর ৬ জনের পারফরম্যান্স আশাবাদী করে তুলছে ফেডারেশন কর্মকর্তাদেরও।

পুরুষদের ১০০ মিটারে মেজবাহ আহমেদ নামটি মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। এবার নতুন মুখ তারই সতীর্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আরেক অ্যাথলেট মোহাম্মদ ইসমাইল। নতুন রেকর্ড গড়ে তিনি জিতেছেন ১০০ মিটারে স্বর্ণ। বিকেএসপির ছাত্র জহির রায়হান ৩২ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে স্বর্ণ জিতেছেন ৪০০ মিটার দৌড়ে। ২০০ মিটারে রেকর্ডটা হয়নি অল্পের জন্য। তবে সেরা হয়েছেন এ ইভেন্টে।

ঘরের ট্র্যাক মাতানোর পুরস্কার হিসেবে ইসমাইল-জহিরদের সামনে এখন এশিয়ান অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপের হাতছানি। আগামী ২১ থেকে ২৪ এপ্রিল কাতারে দোহায় বসবে এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের ২৩ তম আসর। বাংলাদেশ থেকে ৫ অ্যাথলেট অংশ নিতে পারবেন এই চ্যাম্পিয়শিপে।

বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশন ইতিমধ্যেই আয়োজকদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে ইভেন্টের নাম। বাংলাদেশ এবার অংশ নেবে পুরুষদের ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটারে। মেয়েদের ১০০ কিংবা ২০০ মিটারে। ফেডারেশন এখনো অ্যাথলেটদের নাম চূড়ান্ত করেনি।

রবিবার বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, এ সপ্তাহেই অ্যাথলেট চূড়ান্ত করে তাদের নাম পাঠিয়ে দেবেন দোহায়।

১০০ মিটারে স্বর্ণ জেতা মো. ইসমাইল এবং ২০০ ও ৪০০ মিটারে স্বর্ণ জেতা জহির রায়হান এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের দলে থাকছেন তা প্রায় নিশ্চিত। ১০০ মিটারে রৌপ্য জিতলেও পূর্বের রেকর্ড টাইমের চেয়ে ভালো করেছেন বিকেএসপির হাসান আলী। ভালো টাইমিং করেছেন তৃতীয় হওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রাকিবুল হাসানও। এ দুইজনকেও দোহায় পাঠাতে পারে ফেডারেশন।

মো. ইসমাইল, জহির রায়হান, হাসান আলী ও রাকিবুল হাসানের নাম চূড়ান্ত হলে ১০০ মিটার রিলেটাও তাদের দিয়ে করানো যাবে। মেয়েদের মধ্যে ১০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন শিরিন আক্তার ও ২০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন সোহাগী আক্তারের মধ্যে একজনের জায়গা হবে কাতারগামী দলে।

শিরিন না সোহাগী? কে যাবেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। এ সিদ্ধান্তটা নেয়া সহজ হবে না ফেডারেশনের। শিরিন আক্তার ১০০ মিটারে স্বর্ণ জিতেছেন, ২০০ মিটারের রৌপ্য জিতেছেন রেকর্ড টাইমিং করে। আবার সোহাগী আক্তার ২০০ মিটারে রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জেতার পাশাপাশি রৌপ্য জিতেছেন ১০০ মিটারে।

যাদের টাইমিং ভালো করার সম্ভাবনা আছে এমন অ্যাথলেটদের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে পাঠাচ্ছে ফেডারেশন। ২০১৭ সালে এর আগের আসরে অ্যাথলেটিক ফেডারেশন ভারতের ভুবনেশ্বরে পাঠিয়েছিল ১৮ জন অ্যাথলেট। এমন কী তাদের টুর্নামেন্টের দুই সপ্তাহ আগে সেখানে পাঠিয়েছিল অনুশীলন করতে। কিন্তু অ্যাথলেটরা হতাশার খবরই পাঠিয়েছিলেন। সে অভিজ্ঞতা থেকে ঢালাওভাবে অ্যাথলেট পাঠানোর নীতি থেকে সরে এসেছে ফেডারেশন।

আরআই/এসএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।