প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ


প্রকাশিত: ০৮:৫৯ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৫

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড় বাশাইল গ্রামে ১৯৮৫ সালে দিজেন্দ্র নাথ ঘটক ও তার ভাই চিত্তরঞ্জন ঘটক আমোদীনি গাইন বড় বাশাইল মৌজার এসএ ৪৫৫/৪৫৩ নং খতিয়ানের ৬৮৫/৬৮৭/৫৫৩/২০১৬ দাগের ২ একর ৯ শতাংশ জমি বড় বাশাইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নামে আগৈলঝাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে দলিল করে দেয়া হয়।

পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে তারা স্থানীয়দের নিয়ে বাশাইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদে যোগ দান করেন প্রতিষ্ঠাতা দিজেন্দ্র নাথ ঘটকের ছেলে দিলীপ কুমার ঘটক ও সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন তার ছেলের বউ মালা রানী।

বড় বাশাইল গ্রামের ধীরেন জয়ধর, বীবেকানন্দ বাড়ৈ, অনিতা রানীসহ গ্রামের অনেকেই সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক যোগদান করেই বিদ্যালয়ের পাঠদান ভবন করার নামে প্রায় ৫ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে আত্মসাত করেন। পরবর্তীতে চলতি মাঠ জরিপে দিলীপ ঘটক বিদ্যালয়ের নামে ২ একর ৯ শতাংশ জমি সেটেলমেন্ট অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় গোপনে নিজের নামে রেকর্ড করে নেয় এবং ভোগ দখল শুরু করেন। রেকর্ড নেয়া ওই জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। এছাড়া বিদ্যালয়ের পুকুর লিজ দিয়ে গত ১৭ বছরে প্রায় ১২ লাখ টাকা আত্মসাত করেন।

স্থানীয় শ্যামল ঘটক ও বিবেক গাইন অভিযোগ করেন, স্কুলের সম্পত্তি দিলীপ ঘটক তার নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়ে ভোগ দখল করার বিষয়টি  জানার পরে গত মে মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে শিক্ষক দিলীপ ঘটকের ভাড়াটে লোকজন তাদের উপর হামলা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে অভিযোগপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তারা আরো অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক দিলীপ তার অনুগত লোকজন দিয়ে স্কুল পরিচালনার পকেট কমিটি গঠন করে সকল অপকর্মের বৈধতা করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের এক কর্মকর্তা জানান,  জরিপে বিদ্যালয়ের নামে কোনো সম্পত্তি রেকর্ডভুক্ত করা হয়নি।  বিদ্যালয়ের পুরো সম্পত্তি রেকর্ড করে নিয়েছেন দিলীপ কুমার ঘটক ও তার সহযোগীরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিদ্যালয়ের সম্পত্তি আত্মসাতে ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও  এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের সম্পদ আত্মসাতকারী প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তসহ বিদ্যালয়ের সম্পত্তি উদ্ধার করার জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার ঘটকের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্কুলের সম্পত্তি রক্ষার জন্যই আমার নিজের নামে রেকর্ড করেছি। তবে তিনি এর ব্যাখা দিতে রাজি হয়নি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশুতোষ দাসের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক কতৃক সম্পত্তি আত্মসাতের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া বিদ্যালয়ে কোনো মিটিং হয় না। প্রধান শিক্ষক পিয়ন দিয়ে খাতা পাঠায় আমি স্বাক্ষর করে দেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এ সম্পর্কে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।