এশিয়াডে কাবাডির গৌরব ফিরবে কি বাংলাদেশের?

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৫৩ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৮

এশিয়ান গেমসে কাবাডি অন্তর্ভুক্তির পর এ ডিসিপ্লিন থেকে নিয়মিতই পদক আসতো বাংলাদেশের। ১৯৯০ সালে বেইজিং ও ১৯৯৪ সালে হিরোশিমা এশিয়াডে রৌপ্য পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। ১৯৯৮ সালে ব্যাংককে রৌপ্য হারিয়ে বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে ঘরে ফেরে; কিন্তু পরের আসরে বুসান থেকে আবার লাল-সবুজ জার্সিধারীরা পুনরুদ্ধার করে হারানো রৌপ্য; কিন্তু সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে দোহা এশিয়ান গেমস থেকে রৌপ্য হারিয়ে ফেরে ব্রোঞ্জ নিয়ে।

jagonews24

প্রথম ৫ আসরের ৩টিতে রৌপ্য, দুটিতে ব্রোঞ্জ- অন্তত নাম তো থাকতো বাকাডির পদক তালিকায়দ; কিন্তু দেশের জাতীয় এ খেলাটি সর্বশেষ ২ আসরে কোনো পদকই জিততে পারেনি। ২০১০ সালে চীনের গুয়াংজু ও ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিয়ন এশিয়ান গেমস থেকে শূন্য হাতে ফেরে পুরুষ কাবাডি দল। যদিও ২০১০ সাল থেকে অন্তর্ভুক্ত হওয়া মেয়েদের কাবাডিতে দু’বারই ব্রোঞ্জ জিতে বাংলাদেশ নাম লিখেছিল পদক তালিকায়।

এশিয়া গেমসে হারানো গৌরব কী ফেরাতে পারবে বাংলাদেশ কাবাডি দল? এশিয়ার অলিম্পিকখ্যাত এশিয়াডের আরেকটি আসর সামনে রেখে এ প্রশ্ন এখন ক্রীড়ামোদীদের। আগামী ১৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও পালেমবাংয়ে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান গেমস সামনে রেখে গত ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রস্তুতি চলছে পুরুষ কাবাডি দলের। পরপর দুটি এশিয়ান গেমসে পদকশূন্য থাকার হতাশা কাটাতে অভিজ্ঞ কোচ সুবিমল চন্দ্র দাসের অধীনে অনুশীলন করে আসছেন মাসুদুর রহমান, সবুজ মিয়ারা।

jagonews24

৪৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে অনাবাসিক ক্যাম্পের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল কাবাডির এশিয়ান গেমস প্রস্তুতি। পরে ৩০ জন নিয়ে শুরু হয়ে আবাসিক ক্যাম্প। এখন ১৫ জন নিয়ে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। এশিয়ান গেমসের দল হবে ১২ জনের। কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস নোটবুকে ১২ জনের নাম লিখে ফেলেছেন। তবে অনুশীলনের কৌশলের কারণে চূড়ান্ত দল প্রকাশ করবেন ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার ঠিক আগে।

রোববার সন্ধ্যায় পল্টন ময়দানের কাবাডি স্টেডিয়ামে ছেলেদের অনুশীলনের ফাঁকে জাগো নিউজকে দলের প্রস্তুতি ও সম্ভাবনার কথা বলেন প্রধান কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস। এ অভিজ্ঞ কোচের প্রত্যাশা, এবার এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবে।

অধিনায়ক মাসুদ করিম আশাবাদী, ‘এ দলটিতে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বেশি। গত এশিয়ান গেমসে খেলা ৪ জন আছি আমরা। এ দলে আছেন ভারত ও পাকিস্তান প্রো-লিগে খেলা চার খেলোয়াড়।’ অধিনায়ক মাসুদ করিম ও সবুজ মিয়া খেলেছেন পাকিস্তানের প্রো-কাবাডিতে এবং জাকির হোসেন ও জিয়াউর রহমান খেলেছেন ভারতের প্রো-কাবাডিতে।

jagonews24

‘আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা দায়বদ্ধতা আছে। তাগিদও আছে। আমাদের এশিয়ান গেমস থেকে পদক ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দুই গ্রুপে খেলা হবে। গ্রুপের ৪ ম্যাচ জিতলে আমরা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে পারবো’-জাগো নিউজকে বলেছেন অধিনায়ক মাসুদ করিম। সেমিফাইনাল নিশ্চিত হলে পদকও নিশ্চিত হবে। ২০০৬ সালে দোহা এশিয়ান গেমস থেকে নিয়ম করা হয়েছে, সেমিফাইনালের পরাজিত ২ দলকেই দেয়া হয় ব্রোঞ্জ পদক।

দীর্ঘ প্রস্তুতির পরও কাবাডি দলকে প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলার আক্ষেপ নিয়েই যেতে হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ায়। ‘এই একটা জায়গায় আমাদের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে আমরা দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সংশোধন করতে পারতাম। গেমসের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফেডারেশন একটা উদ্যোগ নিয়েছিল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠিও লিখেছিল ফেডারেশন। কিন্তু ওরা বৃষ্টির অজুহাতে আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি’- বলেছেন কাবাডি দলের প্রধান কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস।

যাদের নিয়ে চলছে কাবাডি দলের এশিয়ান গেমস প্রস্তুতি

রেইডার : মাসুদ করিম, জাকির হোসেন, আরদুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন, সাজিদ হোসেন, ফাতিন ফুয়াদ, জাহাঙ্গীর, শরীফ মিয়া।

রাইট কর্নার : সুবজ মিয়া, রুহুল আমিন।

লেফট কর্নার : আশরাফুল শেখ, আরিফ মিয়া।

রাইট কাভার : তুহিন, আবদুল মমিন।

লেফট কাভার : জিয়াউর রহমান।

এশিয়ান গেমস কাবাডিতে (পুরুষ) বাংলাদেশ

সাল

আয়োজক

স্বর্ণ

রৌপ্য

তাম্র

১৯৯০

বেইজিং

১৯৯৪

হিরোশিমা

১৯৯৮

ব্যাংকক

২০০২

বুসান

২০০৬

দোহা

২০১০

গুয়াংজু

২০১৪

ইনচিয়ন

মোট

 

 

আরআই/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।