সেন্ট পিটার্সবার্গের পর মস্কোও মাতালেন নেইমাররা
সেন্ট পিটার্সবার্গের পর এবার মস্কোও মাতালো ব্রাজিল। গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে নেইমাররা ২-০ গোলে সার্বিয়াকে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে শেষ ষোলো। প্রথম দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট পাওয়া ব্রাজিলের এ ম্যাচ ড্র করলেই চলতো। কিন্তু পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা সার্বিয়াকে নাচিয়ে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। গোল করেছেন প্রথমার্ধে পাওলিনহো এবং দ্বিতীয়ার্ধে থিয়েগো সিলভা।
এ জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলো তিতের দল। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে খাদের কিনারায় পড়া আর্জেন্টিনা আগের দিন শেষ ষোলো নিশ্চিত করে বাঁচিয়ে রেখেছে কোটি কোটি মানুষের বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট পাওয়ার পর পুরো ফুটবল বিশ্বের দৃষ্টি ছিল মস্কোর স্পার্টাক স্টেডিয়ামে। ব্রাজিল ব্রাজিলের মতো খেলেই অব্যাহত রাখলো জয়ের ধারা।
স্থানীয় সময় রাত ৯টায় খেলা শুরু হলেও ব্রাজিল সমর্থকরা স্পার্টাক স্টেডিয়াম কানায় কানায় ভরে দেয় বিকেলের পরই। নানা দেশের নানা বর্ণের ব্রাজিল সমর্থকরা মস্কোর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল করে হাজির হয় স্টেডিয়ামে। হলুদ জার্সি, হলুদ ক্যাপ। কত কী সাজ সমর্থকদের। বাদ্যবাদক দলও ছিল খণ্ড খণ্ড মিছিলেন।
রাশিয়ার রাজধানী শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে যখন ব্রাজিলের সমর্থকরা স্পার্টাক স্টেডিয়ামে এক হয় তখন মনে হয়েছে পুরো এলাকায় হলুদের ঢেউ। মনে হয়েছে স্পার্টাক স্টেডিয়াম এলাকা ব্রাজিলেরই কোনো শহর।
উৎসবমুখর সমর্থকদের হতাশ করেননি নেইমাররা। আগের ম্যাচে সেন্ট পিটার্সবার্গের দর্শকরা দেখেছে ব্রাজিলের ছন্দময় ফুটবল, এবার দেখলো মস্কোর দর্শকরা। রাশিয়ার দুই বড় শহর মাতিয়েই হলুদ জার্সিধারীরা উঠে গেলো দ্বিতীয় রাউন্ডে।
ব্রাজিলের ২-০ ব্যবধানের জয়ে নেইমারের গোল নেই। গোল না পেলেও নেইমারই ছিলেন দলের প্রাণভোমরা। নেইমারের নিখুঁত পাসগুলোই বারবার ভেঙে ফেলেছে সার্বিয়ার রক্ষণ দেয়াল। তবে নিজে কয়েকবার গোলের সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু এ ম্যাচে হয়তো তার গোলভাগ্য ছিল না। প্রথমার্ধে জেসুসের সঙ্গে ছোট ছোট পাসে বল দেয়া-নেয়া করে নেইমার দারুণ শট নিয়েছিলেন। কিন্ত সার্বিয়ার গোলরক্ষক ভ্লাদিমির বাম হাতে কোনোমতে বল ঠেকিয়ে সে যাত্রা বাঁচিয়েছেন দলকে।
তবে সার্বিয়া বেশিক্ষণ আটকিয়ে রাখতে পারেনি ব্রাজিলকে। বার্সোলোনার মিডফিল্ডার পাওলিনহোর চমৎকার গোলে লিড এনে দেয় ব্রাজিলকে। মাঝমাঠ থেকে কুতিনহোর লম্বা পাস ধরে বক্সে ঢুকলে এগিয়ে এসে তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। কিন্তু পাওলিনহো বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বলটি গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন জালে।
ম্যাচে ফিরতে দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়েছিল সার্বিয়া। এক পর্যায়ে ব্রাজিলের রক্ষণভাগ বেশ ব্যস্তও রাখতে সক্ষম হয়েছিল ইউরোপের দলটি। তবে সার্বিয়ার হাত থেকে ম্যাচের নেতৃত্ব নিতে বেশি সময় নেয়নি নেইমররা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ৬৮ মিনিটে। নেইমারে কর্নার থেকে থিয়েগো সিলভার হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ হলে ম্যাচ থেকে ছিঁটকে পড়ে সার্বিয়া।
আরআই/বিএ