প্রশ্ন ফাঁসকারী শিক্ষকদের ‘চোরের পেশায়’ নাম লেখানোর পরামর্শ
শিক্ষক নামধারী যেসব ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তাদেরকে শিক্ষকতার মহান পেশা ছেড়ে ‘চোরের পেশায়’ নাম লেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এবার এসব অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত জাতীয় মনিটরিং কমিটির সভায় এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্ব থেকেই সারাদেশের কোচিং সেন্টার, ফটোকপি মেশিন ইত্যাদিতে নজরদারি রাখা হবে। বিজি প্রেস ও বিভিন্ন বোর্ডের প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের ওপরও বিশেষ নজর রাখা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেডিসি) পরীক্ষা সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস বা যে কোনোভাবে ফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসময় শিক্ষক নামধারী যেসব ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন বা পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র খুলে মোবাইলে ফটো তুলে ফেসবুক বা হোয়াটসআপে তুলে দেন তাদেরকে মহান শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে ‘চোরের পেশায়’ নাম লেখাতে পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এবার এসব অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী পাবলিক পরীক্ষার আইনশৃঙ্খলা কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মাঠ প্রশাসনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। সভায় বিজি প্রেসের গোপনীয় শাখায় কর্মরত এবং প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের প্রত্যেকের ছবি, মোবাইল নম্বর, বাসার ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর, বাসার অন্য সদস্যদের মোবাইল ফোন নম্বর ইত্যাদি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে হস্তান্তর করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ছাপাকালীন সময়ে প্রতিদিন বিজি প্রেসের সিসিটিভি ক্যামেরার ছবি পর্যালোচনা করা হবে। সভায় জানানো হয়- যে কেউ ফেসবুক বা অন্য কোনো স্যোসাল মিডিয়ায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়ালে বা এসব স্থানে লাইক দিলে বা শেয়ার করলে আইসিটি অ্যাক্টের সংশ্লিষ্ট ধারা মতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষাসচিব অরুণা বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, রোকসানা মালেক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রাখাল চন্দ্র বর্মন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুবকর সিদ্দিক, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডিআইজি (প্রশাসন) বিনয় কৃষ্ণ বালা, ডিএমপির এর ডিসিডিবি শেখ নাজমুল আলম, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক মো. মাসুদ আলম, সিআইডি’র অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোখলেসুর রহমান, র্যাব সদর দফতরের ইবনে মঞ্জুরুল খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব হাবিবুন নাহার, সিটি এসবির এসএস মো. আজাদ মিয়া, এনটিএমসি এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এফ এম আনজুমান কালাম, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, পুলিশ হেড কোয়াটার এর এআইজি (কনফিডেনশিয়াল) মো. মনিরুজ্জামান, বিটিআরসি এর- সহকারী পরিচালক ইশতিয়াক আরিফ, বিজিপ্রেস এর উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ১ নভেম্বর থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা ২০১৫ শুরু হবে।
এইচএস/এসএইচএস/এমআরআই