অসহযোগ আন্দোলনে নেমেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি


প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ২৫ জুলাই ২০১৫

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পুনরায় বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের কাছে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে নেমেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। এ লক্ষ্যে চলমান আন্দোলন জোরদারে সাংগঠনিক কাজ গোছাচ্ছে জনসংহতি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয়, জেলা ও তৃণমূলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন তারা।

একই সঙ্গে পার্বত্য চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন বেগবান করতে একের পর এক কর্মসূচির ডাক দিয়ে যাচ্ছে জনসংহতি সমিতি। আগামী বুধবার সাপ্তাহিক হাটের দিন রাঙ্গামাটিতে জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হাটবাজার বর্জনের কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে। এর আগে জেলা ও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে জনসংহতি সমিতির ডাকে।

এদিকে আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারকে জুম্ম জনগণের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।

সাংসদ ঊষাতন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, সরকার অব্যাহতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করে চলেছে। পার্বত্য চুক্তিতে স্বীকৃত শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা এখনও পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর করেনি সরকার। সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ১৩ দফা সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হলেও এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন করা হয়নি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ওই ১৩ দফাভিত্তিক অচিরেই ভূমি কমিশন আইন সংশোধন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ঊষাতন তালুকদার শুক্রবার রাঙ্গামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির চতুর্থ রাঙ্গামাটি জেলা ও তৃতীয় সদর থানা শাখার সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন।

জনসংহতি সমিতির চলমান আন্দোলন জোরদারের লক্ষ্যে আয়োজিত ওই সাংগঠনিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুমিত্রা চাকমা। জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনসহ সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার জাতীয় এবং সুমিত্রা চাকমা দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বাচ্চু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির জেলা সভাপতি টোয়েন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রিমিতা চাকমা প্রমুখ।

সম্মেলনে সুমিত্রা চাকমাকে সভাপতি, জোনাকি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও ঝর্ণা চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটি এবং মিনা চাকমাকে সভাপতি, সুবিনা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও শীলা দেওয়ানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট সদর থানা কমিটি গঠিত হয়।

আন্দোলন জোরদারের লক্ষ্যে এর আগে ৯ মার্চ জনসংহতি সমিতির জাতীয়, ২৮ মার্চ জেলা, ১১ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয়, ৯ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির কেন্দ্রীয়সহ প্রায় শাখা, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জনসংহতি সমিতির শীর্ষ নেতারা জানান, চলমান অসহযোগ আন্দোলনকে বেগবান করতে একের পর এক কঠোর কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে। আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহতভাবে চলবে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।