নূর হোসেনের ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ


প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৫

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার প্রধান আসামি সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের বরখাস্তকৃত কাউন্সিলর নূর হোসেনের ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৫ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলর পদে নজরুল ইসলাম পেয়েছেন ঘুড়ি, আমির হোসেন ভান্ডারী পেয়েছেন ঠেলাগাড়ি, আব্দুল আজিজ পেয়েছেন ব্যাডমিন্টন, এআর রাসেল পেয়েছেন টিফিন ক্যারিয়ার ও আরিফুল হক হাসান পেয়েছেন লাঠিম প্রতীক।
 
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসারের সভাপক্ষে জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ঘোষণা করেন। সকল প্রার্থীদের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে এ প্রতীক ঘোষণা করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার রশিদ মিয়া।
 
এর আগে গত সোমবার দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসারের সভাকক্ষে জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে বৈধ ঘোষণা করেন। ১৩ জুলাই ছিল প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২ আগস্ট। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও আব্দুর রহিম মুন্সী, লোকমান হোসেন, আইয়ুব আলী মুন্সী, মজিবুর রহমান ও সামসুন্নাহার বেগম মনোনয়নপত্র দাখিল করেনি।
 
জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান প্রার্থী বৈধ ঘোষণা শেষে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই নির্বাচনী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। নির্বাচনী টিম কাজ করবে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কোনো প্রার্থীর কেউ যদি এমন চিন্তা করে থাকেন ভোট কেন্দ্র দখল, বুথ দখল, এলাকা দখল করে নির্বাচিত হবে না তাহলে এমন চিন্তা বাদ দিতে হবে। কারণ এ নির্বাচনের দিকে নজর থাকবে সারা দেশের। সে কারণে এ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে কোনো রকম প্রশ্ন ওঠতে দেয়া হবে না। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা কেউ ভঙ্গ করলে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
                                                      
এর আগে গত (২৯ জুন) সোমবার নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন অফিসার ও উপ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান এ তফসিল ঘোষণা করেন। এর আগে গত ২৭ জুন নির্বাচন কমিশন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠান।
 
উল্লেখ্য যে, বন্যপ্রাণি আইনের এক মামলায় দণ্ড পাওয়ার সাত মাস পর গত ৭ মে স্থানীয় সরকার বিভাগ নূর হোসেনকে বরখাস্ত করে। একই সঙ্গে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।  সেদিন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি কর্পোরেশন শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই সঙ্গে শূন্য পদে নির্বাচন আয়োজনে অনুরোধ করে ইসিকে।
 
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন আইন)-২০০৯-এর ১৩ ধারা অনুযায়ী নূর হোসেনকে কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ এবং পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। নূর হোসেন খুনের ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে যান। পরে সেখানকার পুলিশ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে ওই দেশের আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের আদালতে বন্য প্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২-এর ধারা ৩৪ অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার সাজা হয়েছে। এই দুটি কারণ দেখিয়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
 
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পদ্মফুল প্রতীকে ২৬৪৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন নূর হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একতারা প্রতীকের আমির হোসেন ভাণ্ডারী পেয়েছিলেন ১৯৯৮ ভোট। ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকের নজরুল ইসলাম ওরফে ছোট নজরুল পেয়েছিলেন ১৭১৬ ভোট। সিংহ প্রতীকে ফয়সাল নেওয়াজ রানা পেয়েছিলেন ১৬১ ভোট। এছাড়া মো. আইয়ুব আলী মুন্সি মোরগ প্রতীকে ২৯৯ ভোট, এম এইচ মনির হাতি প্রতীকে ২৭০ ভোট, হাজী মো. হযরত আলী চাঁদ প্রতীকে ১৫৬ ভোট, মো. বিল্লাল হোসেন টিউবওয়েল প্রতীকে ১০৭ ভোট, মো. শরিফ হোসেন বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৭২ ভোট, এম এ রহিম আপেল প্রতীকে ১৩ ভোট পেয়েছিলেন।

মো.শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।