জয়ের ছন্দে ফিরলো বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৫

দেশের মাটিতে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ এবং ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয় করে টাইগাররা। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই ছন্দপতন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেনো দাঁড়াতেই পারছিলোনা টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি২০-তে পর পর দুই ম্যাচ ও ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের ছন্দে ফিরলো বাংলাদেশ।

রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ১৬৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ২৬ ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। আর এ জয়ে টাইগারদের চ্যাম্পিয়ান্স লিগে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হল।

তবে ইনিংসের শুরুটা ভালো ভাবে করতে পারিনি স্বাগতিকরা। প্রথম ওয়ানডের মত দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও রাদাবার বোলিং তোপে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন তামিম ইকবাল(৪)। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল এগিয়ে এসে খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। রাদাবার পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন লিটন দাশ(১৭)। মিডেল স্ট্যাম্পের বল ফ্লিক করতে গেলে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি।

২৪ রানে দুই উইকেট পতনের পর ম্যাচের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ এবং তরুণ তুর্কি সৌম্য সরকার। একপ্রান্তে সৌম্য সরকারের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং অপর প্রান্তে মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শুরুর চাপ সামলে নেন। প্রথম ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহ গোল্ডেন ডাক পেলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নামের প্রতি সুবিচার করে আস্থার সাথে খেলেন ইনজুরি থেকে ফেরা এই ব্যাটসম্যান। এই দুই ব্যাটসম্যান ১৩৫ রানের জুটি গড়ে জয়ের প্রান্তে নিয়ে যান। জয় থেকে মাত্র ৪রান দূরে থাকতে অ্যাবটের বলে আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৬৪ বলে ৬টি চারে মাহমুদউল্লাহ করেন ৫০ রান।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর বাকি কাজটুকু সাকিব আল হাসানকে নিয়ে শেষ করেন সৌম্য সরকার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে করেন অপরাজিত ৮৮ রান। ৭৯ বলে ১৩টি চার এবং একটি ছক্কায় তিনি এই রান করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে রাদাবা ৪৫ রানে দুটি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন কাইল অ্যাবট।

icc

এর আগে  টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপে ৪৬ ওভার খেলে ১৬২ রানে অল আউট হয়ে যায় প্রোটিয়ারা। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের বোলিং তোপে পড়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশের প্রত্যেক বোলারই এইদিন লাইন লেন্থ অনুযায়ী বল করেন। তাই নিয়মিত বিরতিতে উইকেটের দেখা পায় স্বাগতিকরা।

দিনের শুরুটা করেন ভারতের বিপক্ষে রুদ্রমূর্তি ধারণ করা মুস্তাফিজুর রহমান। গ্যালিতে সাব্বির রহমানের সহজ ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরান কুইন্টন ডি কককে(২)। বাংলাদেশ দলের হয়ে দ্বিতীয় আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই হাসিম আমলাকে(২২) বোকা বানিয়ে পরিষ্কার বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান রুবেল।

১৯তম ওভারে নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই সাফল্য পান নাসির হোসেন। রিলে রুশোকে(৪) বোল্ড করে সাজঘরের রাস্তা দেখান এই অলরাউন্ডার। নিজের প্রথম ওভারে ডেভিড মিলারকে(৯) আউট করে সাফল্য পান মাহমুদউল্লাহও। ২৩তম ওভারের পঞ্চম বলে শর্ট মিডঅফে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মাশরাফি মুর্তজা।

নাসিরের করা ২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে লংঅনে সৌম্য সরকারের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ফর্মে থাকা ফাফ ডু প্লেসিস। ৬৪ বলে তিনটি চারে ৪১ রান করেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। এর পর দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে মুস্তাফিজুর বাংলাদেশকে আবার উল্লাসে ভাসান। তার কাটারে বিভ্রান্ত হন দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান জেপি ডুমিনি(১৩)। ৩২তম ওভারের পঞ্চম বলে মিডঅফে সাব্বির রহমানের হাতে সহজ ক্যাচ দেন এই ব্যাটসম্যান।

ডুমিনির বিদায়ের পর রুবেল হোসেনের করা ৩৬তম ওভারের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ক্রিস মরিস(১২)।  মরিসের বিদায়ের পর বল হাতে আগের ম্যাচের নায়ক রাদাবা(১০) মুস্তাফিজুরের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর নাসির হোসেন নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন। কাইল অ্যাবোটকে(৫) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি। এরপর শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে ফারহান বেহারদিয়েনকে নাসির হোসেনের হাতে ক্যাচে পরিণত করে প্রোটিয়াদের ইনিংস গুটিয়ে দেন অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। বেহারদিয়েন ৪৪ বলে দুটি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৩৬ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে নাসির হোসেন এবং মুস্তাফিজুর রহমান তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া রুবেল হোসেন পান দুটি উইকেট। অপর উইকেট দুটি পান মাশরাফি এবং মাহমুদউল্লাহ।

আরটি/এমআর/আরএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।