ধসে পড়া পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ি সরানোর কাজ চলছে
রাজধানীর লালবাগের শত বছরের পুরোনো সেই পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ির ভবনটি অবশেষে ধসে পড়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দোতলা ভবনের একপাশের ছাদ বিকট শব্দে ধসে পড়ে। এ সময় ভবনের আশেপাশে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। কিছুক্ষণের জন্য রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ফাঁড়ি ধসের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রোববার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ইসলামবাগ চৌরাস্তার অদূরে অবস্থিত ধসেপড়া পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ির ভবনটি বুলডোজার দিয়ে আরেক দফা ভাঙার কাজ চলছে। ভবনটির সামনের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে পুলিশ প্রহরায় ভবনটি ভাঙার কাজ চলছে। এ সময় ওই এলাকাতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে থেকে ঐতিহ্যবাহী পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ির ভাঙার কাজ দেখছে।
সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তারা জাগো নিউজকে জানান, পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকাটি খুবই ব্যস্ততম এলাকা। এ রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। শুক্রবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে ভবনটির একাংশ ধসে পড়ার পর থেকে এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ভবনের বাকি অংশটুকু ভেঙে পড়ে যেকোনো সময় হতাহত ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় তারা বুলডোজার দিয়ে ভবনটি ভেঙে ফেলছেন।
পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুর রহমান জানান, পুরোনো এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে বহু বছর যাবত পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম চলছিল। চার মাসে আগে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখো দেয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ওই সময় ফাঁড়িটি ইসলামবাগ চৌরাস্তার সেরাজকোট ভবনের পাঁচতলায় স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ফাঁড়িতে একজন সাব ইন্সপেক্টর, পাঁচজন এএসআই, ১৯ জন কনস্টেবল ও সাতজন আনসার কর্মরত রয়েছে বলে তিনি জানান।
এলাকার পুরোনো বাসিন্দা হাইড অ্যান্ড স্কিন ডিলার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নবাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, কয়েক মাস আগে তিনিই মিডিয়াকে অনুরোধ করে ডেকে এনে ঝুঁকিপূর্ণ পোস্তা পুলিশ ফাঁড়ি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করিয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
তিনি জানান, পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও ফাঁড়ি পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ সেখানে বসে বিশ্রাম নিতেন। বেশিরভাগ সময়ে সেখানে মোটরসাইকেল রাখা হতো। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিকট শব্দে ভবনটির একপাশ ধসে পড়ে। তবে ওই সময় কোনো পুলিশ সদস্য বা অন্য কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনটি কত বছরের পুরোনো এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমপক্ষে একশ’ বছরের পুরোনো তো হবেই।
জানা গেছে, ভবনটির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে সরকারের মামলা চলছে। পোস্তা ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাহমুুদুর রহমান বলেন, এখনো পর্যন্ত রায় হয়নি তবে যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের দখলে আছে তাই এ ভবনের মালিক আমরাই।
এমইউ/বিএ/আরআই