মধ্যরাতেও জমজমাট সিলেটের ঈদবাজার
ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই ঈদের কেনাকাটার জন্য হাতে খুব বেশি সময় নেই। শেষ সময়ের কেনাকাটায় ব্যস্ত নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে সবাই। সকাল থেকে সেহেরির আগ পর্যন্ত অনেকেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সিলেটের বিপণী বিতানগুলোতে।
প্রিয় মানুষটিকে নতুন কাপড় দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে তাদের চেষ্টার কমতি নেই। এজন্য গভীর রাতেও কেনাকাটা করছেন তরুণ-তরুণীরা। ব্যবসায়ীদেরও দম ফেলার ফুরসত নেই। সিলেট নগরের অভিজাত বিপণীবিতান থেকে ফুটপাত সর্বত্র জমে উঠেছে ঈদবাজার।
ঘড়ির কাটায় রাত সাড়ে ১২টা। নগরের নয়াসড়কের একটি বিপণীবিতানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন ব্যাংক কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে জানান, সারাদিন রোজা রেখে অফিস করে শরীরে ক্লান্তি ভর করে। তাই ছেলে-মেয়েদের আবদার ও ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও এ কয়দিন বের হতে পারিনি, তাদেরকে নিয়ে আজ বের হলাম। সাধারণত অন্যান্য বছর দিনে শপিং করলেও এবার রাতে বের হলাম।
শুধু সালাউদ্দিন আহমেদই নন, শনিবার রাতে কথা হয় কেনাকাটা করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুুষের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, ভ্যাপসা গরমে রোজা রেখে দিনে বের হওয়াটা কষ্টকর, তাই তারা রাতের সময়টাকেই কেনাকাটার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
স্কুল শিক্ষক শাহিদা জামান জাগো নিউজকে বলেন, সাধারণত দিনে বিপণীবিতানগুলোতে প্রচুর ভিড় থাকে। তাই কেনাকাটা করার জন্য রাতে বের হয়েছি। তবে এসে দেখছি রাতেও মানুষজনের ভিড়। তিনি জানান, ফিক্সড প্রাইসের নাম করে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো কাপড়ের দাম হাঁকাচ্ছেন। এতে ক্রেতাদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
বিপণীবিতানের ব্যবসাযীরা বলছেন, মার্কেট, দোকানের ভাড়া এবং আনুসঙ্গিক খরচাদি মিলিয়ে তাদের পোশাকের দাম নির্ধারণ করতে হয়। এজন্য মার্কেট অনুযায়ী দামে কিছুটা তারতম্য থাকতে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটির ফ্যাশন ওর্য়াল্ডের সত্বাধিকারী তারেক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, দিনের তুলনায় রাতে বেচা-কেনা ভালো। তাই গভীর রাত পর্যন্ত আমাদের দোকানপাট খোলা রাখতে হচ্ছে। ভালোভাবে সেহেরি করারও সময় পাচ্ছিনা।
কাকলী শপিং সিটির ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় ক্রেতারা তাদের সুবিধামতো সময়ে কেনাকাটা করতে বের হচ্ছেন। যেহেতু দিনে রোজা ও ব্যক্তিগত কাজে অনেকেরই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতে হয়। তাই তারা শপিং করার জন্য রাতের সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন।
ফুটপাতে শপিং করতে আসা দিনমজুর রশিদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, সারাদিনের কাজের পর ইফতার করে শরীরে ক্লান্তি ভর করে তাই তারাবির নামাজ পরে বের হলাম। ছেলের জন্য শার্ট কিনেছি, এবার মেয়েকে কিছু একটা কিনে দিতে পারলেই আমি খুশি।
ফুটপাতের ব্যবসায়ী তরিকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, সারা বছর যে পরিমাণ বিক্রি হয়। এক রমজানের ঈদেই তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয়। তাই নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের পছন্দমতো ও ভালো পোশাক তুলে দিতে আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। দিনের তুলনায় রাতে বিক্রি বেশি হওয়ায় গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে।
ছামির মাহমুদ/এমজেড/পিআর