বাংলাদেশে এসেই হাত খুলে খেলা কঠিন : মাশরাফি
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের দুই ভয়ঙ্কর আর সফল উইলোবাজ ক্রিস গেইল এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালাম দলে এসেছেন, তারপরও টস জিতে কেন ব্যাটিং না নিয়ে ফিল্ডিংয়ে নেমে পড়া? টার্গেট নাগালের মধ্যেই ছিল; কিন্তু অনেক মূল্যে দলে ভেড়ানো ম্যাককালাম ও গেইল দু’জন একসঙ্গে জ্বলে উঠতে না পারায় ম্যাচ হাতছাড়া।
ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে যে দু’জনার রেকর্ড, পরিসংখ্যান আকাশছোঁয়া। সবচেয়ে বেশি রান, সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক ও সবচেয়ে বেশি ছক্কা যাদের, তারা দু’জন কিছুই করতে পারলেন না। বাঁ-হাতি গেইল ১৩ বলে ১৭ আর ম্যাককালাম ১৪ বলে ১৩ রানে আউট।
এখানে কি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই স্পিনার মেহেদি হাসান আর রশিদ খানের কৃতিত্ব বেশি? নাকি স্পোর্টিং ও শতভাগ ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলতে খেলতে অভ্যস্ত গেইল ও ম্যাককালাম উইকেটের গতি এবং বাউন্সের সাথে মানিয়ে নিতে না পারায় চট জলদি আউট হয়ে গেলেন?
শনিবার রাতে খেলা শেষ হবার পর থেকে সবার মনেই ঘুরেফিরে এসব প্রশ্ন উকি-ঝুঁকি দিয়ে যাচ্ছে। রাতে সে সব কৌতুহলি প্রশ্নের জবাব দিলেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। টস জিতে ব্যাটিং না করে ফিল্ডিংয়ে নামার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সন্ধ্যার খেলায় দ্বিতীয় ইনিংসে ডিউ (শিশির) বেশি থাকে। আগে-ভাগে বোলিং করে নেয়াটাই ভালো। পরের সেশনে শিশিরে ভেজা বল গ্রিপ করায় বোলারদের সমস্যা হয়। এ কারণেই মূলতঃ এই সিদ্ধান্ত।’
সোজা-সাপ্টা কথা বলায় তার এমনিতেই জুড়ি নেই। আজ গেইল-ম্যাককালাম প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েও অবলীলায় একটি নির্জলা সত্য কথা বলে ফেললেন মাশরাফি। প্রশ্ন ছিল গেইল ও ম্যাককালামের কাছে নিশ্চয়ই অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিল। সে ক্ষেত্রে আপনি কী আশা ভঙ্গের বেদনায় নীল?
এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মাশরাফি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তার ভাবার্থ হলো- তার দল রংপুরের চেয়েও গেইল-ম্যাককালামদের কাছে দর্শকদের প্রত্যাশা বেশি ছিল। তাই মুখে এমন কথা, ‘গেইল আর ম্যাককালামের মত এমন দু’জন ব্যাটসম্যানের কাছে অবশ্যই প্রত্যাশা ছিল। দর্শকরাও আমার মনে হয়, ওদের খেলা দেখতেই এসেছিলেন।’
গেইল-ম্যাককালামরা জ্বলে উঠতে পারেননি। তা নিয়েও যে তার খুব বেশি হতাশা আছে, তা বোঝা গেল না। কথা বার্তা ও শরীরি অভিব্যক্তি বলে দিলো তাদের কম সময় ও সল্প সংগ্রহে আউট হয়ে যাওয়ায় তিনি যে খুব অবাক হয়েছেন- তাও নয়। তার পরিষ্কার উপলব্ধি, বাংলাদেশের স্লো ও লো উইকেটে এসে অন্য জায়গার মত হাত খুলে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটানো আর ঝড়ো ব্যাটিং করা কঠিন।
গেইল-ম্যাককালাম রান করতে না পারার কারন জানতে চাওয়া হলে তাই মাশরাফির মুখে এমন কথা, ‘বাংলাদেশে এসেই আসলে হাত খুলে শট খেলা খুব কঠিন। আমার কাছে যেটা মনে হয়, নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া বা ভারতেও যেমন উইকেট হয়, আমাদের উইকেট তেমন না। তাদের মানিয়ে নেয়ার ব্যাপার ছিলো।’
তরুণ মেহেদি হাসান বিপিএলের মত বড় মঞ্চে সুযোগ পেয়েই নিজেকে মেলে ধরলেন। আম্পায়ার সদয় থাকলে হয়ত গেইল আর ম্যাককালাম দু’জনার উইকেটই পেতে পারতেন এ তরুণ অফ স্পিনার। তার বোলিংয়ের প্রশংসা সবার মুখে মুখে।
তার সম্পর্কে মাশরাফির মূল্যায়ন, ‘আসলে সে খুব ভালো করেছে। বিশেষ করে প্রথম স্পেলটা খুব ভালো ছিলো। ঘরোয়া লিগে সে ভালো বোলিং করেছে। ওর অভিজ্ঞতা ভালোই আছে। বিপিএলে ব্রডকাস্ট হচ্ছে, গেইল-ম্যাককালাম ছিলো স্ট্রাইকে। তারপরও নিজেকে ঠিক রেখে দারুণ বোলিং করেছে মেহেদি।’
এআরবি/আইএইচএস