আল্লাহর গুণে একাকার হয় রোজাদার
রমজান হচ্ছে কুরআনুল কারীম নাযিলের মাস; রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাতের মাস ও রাত্রি জাগরণ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাস। এ মাসের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও বান্দিরা তাদের বছর শুরু করেন। যাতে সারা বছর ইবাদাত-বন্দেগীতে কাটিয়ে দিতে পারেন। লাভ করতে পারেন সীমাহীন জীবন আখিরাতের কল্যাণ। এ কল্যাণের সূচনা হয়েছিল হযরত আদম আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগ হতে; যা এখনও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওয়ারিশগণ চালু রেখেছেন।
এ মাসের রোজা আল্লাহ আমাদের ওপর ফরজ করে আমাদেরকে তার সিফাতের তথা গুণাবলীর অংশীদার বানিয়েছেন। করেছেন অনন্য মর্যাদার অধিকারী। আমরা আল্লাহর গুণাবচক নামগুলো দিয়ে আমাদের নাম রাখি। যেমন আমরা জানি রাহিম, কারিম, হালিম, আজিম ইত্যাদি আল্লাহর গুণবাচক নাম। আর আমরা আবদুর রাহিম, আবদুল কারিম, আবদুল হালিম, আবদুল আজিম ইত্যাদি নাম রেখে আল্লাহর রঙ্গে আমাদেরকে সাজিয়ে নিতে চেষ্টা করি। একটাই উদ্দেশ্য আল্লাহ তাআলাকে রাজি খুশি করানো এবং কোনো কোনো ভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করাতে পারলেই আখিরাতের মুক্তি নিশ্চিত। ঠিক আল্লাহর এমন অনেক গুণাবলী আছে যা তার কর্মের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। যা তার প্রিয় বান্দা-বান্দীরা কর্মের মাধ্যমে কিছুটা পালন করতে সচেষ্ট হয়। আর এই সুযোগ আসে পবিত্র রমজান মাসে।
পানাহার : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সর্ববস্থায় কোনো কিছুই আহার করেন না; ঠিক আল্লাহর প্রিয় বান্দারাও রমজান মাসের দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকেন। এটাই আল্লাহর গুণ। এই গুণের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করে থাকেন।
নিদ্রা : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘুমান না এমনকি তন্দ্রাও তাকে স্পর্শ করেন না। তিনি সবসময় বান্দার সকল কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। বান্দাও রমজান মাসে রাত্রির বেশিরভাগ সময় বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত করেন। যদিও ঘুমান সেটা খুব কম। রাত্রিতে কিয়ামুস সালাত তথা তারাবিহ আদায়; তাহাজ্জুদ আদায়; ভোর রাতে সাহরি খাওয়া এবং ফজর নামাজ আদায় করে তাসবিহ তাহলিলের পর ইশরাক নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর প্রিয় বান্দারা বিম্রামে যান। সুতরাং আংশিক হলেও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের গুনাহবলী নিদ্রামুক্ত থাকেন।
দান : এ মাসেই মুমিন বান্দারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহর আরেকটি গুণ দানের অনুকরণে আল্লাহর রাস্তায় বেশি বেশি দান করেন। এমনকি দান-অনুদানে মুমিনগণ প্রতিযোগিতায় লেগে যান। এ রকম আরও অনেক গুণাবলী রয়েছে যা পালনের মাধ্যমে বান্দা তার নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট থাকবে।
সর্বোপরি আমরা যাতে আল্লাহর হুকুম পালনের মাধ্যমে তার নৈকট্য অর্জন করতে পানাহার থেকে বিরত থাকা; নিদ্রামুক্ত রজনী কাটানো; দানের হাত প্রশস্তকরণ; ইবাদাত-বন্দেগীর বাইরে কথা না বলে সুন্দরভাবে রোজার অনন্য বৈশিষ্ট্য আমাদের প্রত্যেকের মাঝে বাস্তবায়ন করতে পারি। সে পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার তাওফিক কামনা করি। আল্লাহ আমাদের বকুল করুন। আমীন।
জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন।
এইচএন/পিআর