খেলাপি ঋণ আদায়ে মামলার আহ্বান সুরঞ্জিতের


প্রকাশিত: ০৮:৩৫ এএম, ২৯ জুন ২০১৫

খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থ আদালতে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সোমবার জাতীয় সংসদে আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মামলা করা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে। ৫৫-৫৬ হাজার কোটি টাকা যদি খেলাপি ঋণ হয়, তাহলে আলাপি ঋণ কত? আলাপি ঋণ মানে যেগুলোর কোনো হদিস নেই।

জ্যেষ্ঠ সাংসদ সুরঞ্জিত আরো বলেন, হলমার্ক গেল, সোনালী, রুপালী ব্যাংকের ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা গেছে। বেসিক ব্যাংক তো বেসিক হয়ে গেছে। এসব খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারলে বাজেট দিয়ে কি হবে?

একই সঙ্গে ব্যাংকিং কমিশন করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও গুপ্ত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

মন্ত্রীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সংসদে মন্ত্রীরা অনেকে অনেক কথা বলেন। আমি নির্বাচন করতে পারব কি পারব না। এই সিদ্ধান্ত সংসদ দিতে পারে না। এজন্য নির্বাচন কমিশন, উচ্চ আদালত ও সংবিধান রয়েছে। মন্ত্রীদের কথা বলার সময় সর্তক হয়ে কথা বলা উচিত। মন্ত্রীরা যে যে দলেরই থাকেন আপনাদের আলাদা আলাদা এজেন্ডা থাকতে পারে এবং আপনারা যা ইচ্ছা বলতে পারেন। কিন্তু এমন কিছু বলবেন না যেন আমাদের বিব্রত হতে না হয়। যেহেতু আপনারা মন্ত্রী, আপনাদের বক্তব্যের দায় প্রধানমন্ত্রীর উপর বর্তায়।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আরো বলেন, খালেদা জিয়ার বিচারে কি হবে। ২১ আগষ্ট, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তার কি শাস্তি হবে সেটা আদালত বুঝবে।

বাংলাদেশ নিয়ে হাউজ অব কমন্সে আলোচনা করা হয়েছে অভিযোগ করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কঠোর সমালোচনা করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কি হয়েছে তা ব্রিটিশ সরকার আমাদের সরকারকে বলবে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়েছে সেখানে বলতে পারে। কিন্তু পার্লামেন্ট টু পার্লমেন্ট এভাবে সমালোচনা করতে পারে না। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই। বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনারও প্রস্তাব করেন তিনি।

সুরঞ্জিত বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে এ পার্লামেন্ট তৈরি করেছি। বাংলাদেশে কি হয়েছে, যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে? আমরা হাউজ অব কমন্সকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। এক পার্লামেন্টের আরেক পার্লামেন্টের মধ্যে সর্ম্পক হবে শ্রদ্ধাশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ। হাউজ অব কমন্সকে আমরা মাদার অব পার্লামেন্ট বলে থাকি। কিন্তু ১৭ জুন হাউজ অব কমন্সের চেম্বারে আইন প্রণয়ন ছাড়া ওয়েস্ট মিনিস্টারের ৩০ নম্বর বৈঠকে একটা রং ব্রিফিং হোল্ড করে কতগুলো ভুল ইস্যু নিয়ে আলোচনা করলো। এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক রাষ্ট্রের একটা সম্পর্ক আছে। সেখানে কিছু পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু এভাবে এক পার্লামেন্ট আরেক পার্লামেন্টের বিষয় নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলতে পারে না।

স্পিকারের উদ্দেশ্যে সুরঞ্জিত বলেন, আপনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) সভাপতি। তাই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি বিষয়টি তুলবেন। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনারও প্রস্তাব করেন তিনি।
 
সুরঞ্জিত বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর তো একটা টু শব্দও করেনি। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি জারি করে হত্যার বিচার বন্ধ করে দেন, তাতেও কোনো কথা বলেনি ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। জিয়াউর রহমান ১৯৮৬ সালে হ্যা-না ভোট দিয়ে ৯৮ শতাংশ ভোট কাস্টিং দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করলো। কই তখন তো কিছু বললেন না?

প্রসঙ্গত, শনিবার সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপর্সন বেগম খালেদা জিয়া অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে মন্তব্য করেন।

এইচএস/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।