ঈদে নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক অসন্তোষ হবে না


প্রকাশিত: ০৫:১০ এএম, ২২ জুন ২০১৫

আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে পোশাক শিল্প এলাকায় কোনো ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হবে না বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তবে তারা এও বলেছেন, পোশাক শ্রমিকদের আগামী ১৫ জুলাইয়ের আগে বেতন বোনাস পরিশোধ করা হলে কোনো ধরনের অসন্তোষ সৃষ্টি হবে না। আর মালিকপক্ষ ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছেন বিকেএমইএ এর পক্ষে সংগঠনটির সহ-সভাপতি জিএম ফারুক।
 
রোববার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আঞ্চলিক ক্রাইসিস প্রতিরোধ কমিটির সভায় মালিক পক্ষ ও শ্রমিক নেতারা তাদের এ অবস্থানের কথা জানান। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা।

এছাড়াও ওই সভায় মালিকপক্ষ টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেয়ার কথা বলেছে। আর পাশাপাশি মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে শ্রমিক নেতাদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে। শিল্প পুলিশের ভূমিকা ও শ্রমিক নেতাদের উষ্কানির বিষয়টিও ওঠেছে ওই সভায়।
 
সভায় শ্রমিক নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ ও অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল একমত পোষণ করে বলেন, ঈদের আগে বেতন বোনাস দেয়া হলে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে না। কারণ, শ্রমিকদের পেটে ভাত না থাকলেই তারা আন্দোলন করবেন। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগই থাকুক ঈদের আগে যেন কাউকে ছাটাই করা না হয়।

নিট গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ এর  পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি জিএম ফারুক বলেন, আমরা মালিক শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছি। কোনো প্রতিষ্ঠানে সমস্যা দেখা দিলে তা সমাধান করছি। ইতোমধ্যে সেনসিবল গার্মেন্টস নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, ওই মালিক দেশের বাইরে ছিলেন। মালিক দেশে এসেছেন তার সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করা হয়েছে। আগামী দু’তিনদিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।
 
জিএম ফারুক আরো বলেছেন, আগামী ১৫ জুলাইয়ের আগে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধ করতে বিকেএমইএ উদ্যোগ নিয়েছে। সব মালিকপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। আর ঈদের আগে যাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাটাই না করা হয় তারও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে ঈদের আগে সকল প্রতিষ্ঠান তাদের শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধ করে দেবে। আর বোনাসের বিষয়ে যে যে প্রতিষ্ঠান যে নীতিতে দিচ্ছে তাদের সেভাবেই পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।
 
এর আগে শ্রমিক নেতারা জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন ও বোনাস পরিশোধের কথা উল্লেখ্য করেন। সেই সঙ্গে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যেই বেতন বোনাস পরিশোধের বিষয়ে দাবি করেন। তাহলে কোনো ধরনের অসন্তোষ সৃষ্টি হবে না বলে শ্রমিক নেতারা উল্লেখ্য করেন।
 
সভায় জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা বলেন, শুধু শ্রমিক বা শুধু মালিকদের সুবিধা দেখলে হবে না। মালিক শ্রমিক উভয়ের সুযোগ সুবিধা দেখতে হবে। পুরো বেতন বোনাস পরিশোধ করলে ঈদের পর শ্রমিকরা আসে না। তখন প্রতিষ্ঠান শিপমেন্ট করতে পারে না। তাতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তখন একটি প্রতিষ্ঠানের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক সময় ৩ বছরেও হয় না। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আবার শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে যাতে ঈদ পালন করতে পারে সেটাও মালিকদের দেখতে হবে।
 
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম, বিকেএমইএ এর সহ-সভাপতি জিএম ফারুক, ডিআই-২ আক্তার মোর্শেদ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক আরিফুজ্জামান, এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন, শ্রমিক নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ, শ্রমিক নেতা অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল, কেন্দ্রীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, আবু জাফর কবির আসলাম, ইকবাল হোসেন, মাহামুদ হোসেন সহ অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
 
মো.শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।