তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলেন জিমিরা
পরিকল্পনা ছিল কী, আর মাঠে হলোটা কী? কী ছিল জিমিদের প্রত্যাশার গান, বাস্তবতা বললছে কী? ৩২ বছর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে পাকিস্তানকে জিততে নাভিঃশ্বাস উঠেছিল, সেই পাকিস্তান এভাবে হেসেখেলে বড় জয় নিয়ে হোটেলে ফিরলো? ম্যাচের পর মওলানা ভাসানি স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে বের হওয়ার সময় এমন অনেক প্রশ্ন ছিল দর্শকদের মুখে।
প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে ছিল না। বোঝাই যায়নি কিভাবে খেলতে চেয়ে কী খেললো বাংলাদেশ? ডিফেন্স করলো নাকি ওফেন্সিভ খেললো জিমিরা সেটা ছিল একটা ধাঁধা। পুরো ম্যাচকে যদি এক বাক্যে আনা হয় তাহলে চলে আসে তালগোল পাকানোর কথাই। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিমিরা আসলে তালগোলই পাকিয়ে ফেলেছিলেন।
পাকিস্তানের এ দলটি আহামরি নয়। ব্যাক্তিগতভাবে তারকারও অভাব দলটিতে। তারপরও অংক কষে কষেই তারা ম্যাচটা এমনভাবে জিতে গেলো যে বাংলাদেশের হারের আগে ‘শোচনীয়’ শব্দটি যোগ করে দেয়া যায় অনায়াসেই। পাকিস্তান দলে একজন সোহেল আব্বাস নেই। তারপরও তারা কৌশলে এক-এক করে ৯টি পেনাল্টি কর্নার আদায় করে নিয়েছে। ৭ গোলের তিনটিই করেছে তারা পেনাল্টি কর্নার থেকে। একটি পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে এবং বাকি তিনটি ফিল্ড গোল।
বাংলাদেশের খেলায় ভুল পাসের ছড়াছড়ি ছিল। বল ধরেও জিমিরা আবার হারিয়েছেন অহরহ। মাঝ মাঠের খেলাটা কখনো ধরতে পারেনি স্বাগতিকরা। ম্যান মার্কিংটাও ঠিকমতো করতে পারেননি মাহবুব হারুনের শিষ্যরা। যে কারণে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা ফ্রি খেলার সুযোগটা বেশি পেয়েছেন। শেষ দিকে বাংলাদেশের ডিফেন্স এক প্রকার দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
একমাত্র প্রথম কোয়ার্টারে বাংলাদেশ একটু গুছিয়ে খেলেছে। পরের তিন কোয়ার্টারের শুরুতেই পাকিস্তান ঝড় বইয়ে দিয়েছে। শুরুতে চাপ সৃষ্টি করেই তারা গোল আদায় করেছে। সপ্তম গোলটি তারা করেছে শেষ মিনিটে। বাকি ৬ গোলই পাকিস্তান আদায় করে নিয়েছে প্রথম দিক দিয়ে।
ঘনঘন কর্নার পেয়েও যখন সেভাবে গোল পাচ্ছিল না পাকিস্তান তখন পেনাল্টি কর্নারের কম্বিনেশন পাল্টিয়েছে তারা। তাতেই সফল, তিন তিনটি গোল পেনাল্টি কর্নার থেকে। অথচ বাংলাদেশ দলে একাধিক পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট থাকলেও তাদের সামনে সে সুযোগ আসেনি। ৬০ মিনিটের ম্যাচে পেনাল্টি কর্নারশূন্যই থেকেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
সারোয়ার হোসেন নিষিদ্ধ হওয়ায় মাঝমাঠে তার অভাবটাও টের পাওয়া গেছে। এ মুহুর্তে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার সারোয়ার। মাঝ মাঠে নিয়ন্ত্রণ হারানোয় চাপটা পড়েছে রক্ষণে। তার সুফলটা ভালোভাবেই নিয়েছে এশিয়া কাপের তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা।
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম