ড্র হলো ফতুল্লা টেস্ট
বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের একমাত্র টেস্টে যতটা না ছিল ব্যাট-বলের লড়াই, তার চেয়ে বেশি লড়তে হল বৃষ্টির সাথে। আর বৃষ্টির সাথে লড়ে শেষ পর্যন্ত অনুমিত ড্রই হলো ফতুল্লা টেস্ট। কিন্তু ড্র-এর আগে টাইগাররা নিজেদের ঝুড়িতে যোগ করে নিলো `লজ্জার` ফলোঅন।
ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ১৫ ওভার বল করার পড়ে দুই দল ড্র মেনে নেয়ায় অমীমাংসিতভাবে শেষ হয় ফতুল্লা টেস্ট। এই সময় বাংলাদেশ কোন উইকেট না হারিয়ে ২৩ রান তুলতে সক্ষম হয়। তামিম ইকবাল ১৬ এবং ইমরুল কায়েস ৭ রান করেন।
পাঁচ দিনের টেস্টে হওয়ার কথা ৪৫০ ওভার কিন্তু বৃষ্টির কারণে হল ১৮৪.২ ওভার। প্রথম দিনে খেলা হয়েছিল মাত্র ৫৬ ওভার। দ্বিতীয় দিন কোনো বলই মাঠে গড়ায়নি। তৃতীয় দিন মাঠে খেলা হয় ৪৭.৩ ওভার। চতুর্থ দিনে হয় মাত্র ৩০.১ ওভার। আলোস্বল্পতা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রথম চারদিনে খেলা হয়েছে মাত্র ১৩৩.৪ ওভার। আর পঞ্চম দিনে আর ৩৫.৪ ওভার খেলতেই শেষ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। এরপর আর ২৪ ওভার খেলা হয়। শেষ পর্যন্ত কিছু সময়ের জন্য নিশ্চিত ড্রয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া ফতুল্লা টেস্ট জমে উঠে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়।
রোববার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় প্রথম সেশনে এক বলও মাঠে গড়ায়নি। সকাল থেকেই কাভার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল সেন্টার উইকেটসহ মাঠের বেশিরভাগ অংশ। তবে শনিবার রাতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের অবস্থা খুব ভালো নয় বলে জানিয়েছিলেন পর্যবেক্ষকরা। তাই পঞ্চম দিনের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।
পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। ওয়ানডে স্টাইলে খেলতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান বোধকরি ভুলেই গেছেন এটা একটা টেস্ট ম্যাচ।
সকালে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার পথ দেখান সাকিব আল হাসান(৯)। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি টাইগারবাহিনী। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিতে থাকে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
সাকিবের বিদায়ের পর হরভজন সিংয়ের বলে এগিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন শুরু থেকে স্বচ্ছন্দে খেলতে থাকা ইমরুল কায়েস। সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিতে কোন ভুল করেননি উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। ১৩৯ বলে খেলে ৭২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর বরুন অ্যারুনের বল অফসাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে ফিরে গেছেন সৌম্য সরকার। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ৫৪ বলে ৩৭ রান করেন।
সৌম্যর বিদায়ের পর একই পথে হাঁটেন শুভাগত হোম। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে লেগস্লিপে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফিরে যান তিনি। চা বিরতির পর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে লেগস্লিপে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৪ রানে ফিরে যান লিটন দাস। এরপর হরভজনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন মুহাম্মদ শহিদ। ধাওয়ানের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন শহিদ। তাইজুল এক প্রান্তে সাবলীল ব্যাট করতে থাকলেও তিন রান নিতে গিয়ে রান আউটে কাটা পরেন জুবায়ের হোসেন।
ভারতের পক্ষে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৫ উইকেট নেন। এছাড়া দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা হরভজন সিং পান ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ভারত ৪৫৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে।
আগামী বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচ সিরিজ ওয়ানডের প্রথম ম্যাচ।
আরটি/এমআর/আরআই