শিশির বলেছিলেন ‘তুমিই পারো ম্যাচটা জেতাতে’

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৩ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

তৃতীয় দিন দুপুর পর্যন্ত ম্যাচটা বাংলাদেশের হাতেই ছিল; কিন্তু তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে নাথান লিওন আর অ্যাস্টন অ্যাগারের ঘূর্ণি বলে বাংলাদেশ যখন ২২১ রানে অলআউট হয়ে গেল এবং অস্ট্রেলিয়ার সামনে মাত্র ২৬৫ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিল, তখন বিশ্বাসের পাল্লাটা পেন্ডুলামের মত দুলছিল; কিন্তু দিন শেষে ম্যাচটা পুরোপুরি হেলে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার দিকে।

কারণ, দিন শেষে ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ ৮১ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথে নিয়ে এসেছিলেন।

আজ সকালে যখন ওয়ার্নার সেঞ্চুরি করেন তখন তো মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বুঝি আর বাঁচানোই গেল না; কিন্তু ঢাকার উইকেট যে আনপ্রেডিক্টেবল! ক্রিকেটও তো গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। শেষ বল পর্যন্ত যার সম্পর্কে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন সেই সাকিব আল হাসানই।

তিনি ফেরালেন স্মিথ এবং ওয়ার্নারকে। শেষ পর্যন্ত নিলেন ৫ উইকেট। তাইজুল তিনটি এবং মিরাজ দুটি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে হ্যাজলউডকে তাইজুল এলবিডব্লিউ করার সঙ্গেই (২০ রানের ব্যবধানে) বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। তবে বিজয়ের মধ্যমণি হয়ে থাকেন কেবল সাকিব আল হাসানই। একক অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে তিনি উপহার দিলেন ঐতিহাসিক এক জয়।

বাংলাদেশ যখন একেবারে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখনও বিশ্বাস হারাননি সাকিব। সতীর্থদের মধ্যে সাহসের সঞ্চার করার চেষ্টা করেছেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তাদের জয়ের সামর্থ্য আছে। মনোবল যেন না হারায়। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে এসে সাকিব সেটাই জানান।

সাকিব বলেন, 'জানতাম না আমাদের ওপর আজ কেউ আস্থা রাখতে পেরেছিল কি না। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির সময় আমি সতীর্থদের বলেছিলাম, আমাদের বিশ্বাস আছে। এখনও সুযোগ আছে আমরাই জিতব।'

এরপরই সাকিব মাইক্রোফোন নিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বাংলায় বললেন, 'খেলার শুরুর দিকে আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যে, আমরাই জিতব। তবে তৃতীয় দিন শেষে এসে আমাদের অনেকের মধ্যে মনে হয়েছিল ম্যাচটা জিততে পারব না। কিন্তু আপনারা দর্শকরাই আমাদের জিতিয়েছেন। আপনাদের আত্মবিশ্বাস ছিল এজন্য স্টেডিয়ামে এসেছেন, আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। এ কারণে আমরা ম্যাচটা জিতেছি। আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ।'

এ সময়ই নিজের মোটিভেশন নিয়ে কথা বলেন সাকিব। জানিয়ে দেন কোথা থেকে এত আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন তিনি। সাকিব জানান, ‘তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরই তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন, তারই একমাত্র ক্ষমতা আছে ম্যাচটি জেতানোর। তিনিই পারেন ম্যাচটি জেতাতে।’

সাকিব বলেন, 'আরও একটি ঘটনার কথা বলি, গতকাল রাতে আমি যখন আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম, তখন তাকে বলছিলাম যে আমরা মনে হয় হেরে যেতে পারি। তখন আমার স্ত্রী আমাকে সাহস জুগিয়ে বলেছিল, পারলে একমাত্র তুমিই পারো বাংলাদেশকে জেতাতে। সেখান থেকেই আমি আত্মবিশ্বাসটা পেয়েছিলাম।'

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।