অনভ্যস্ত তিন নম্বরে আবারো অনুজ্জ্বল ইমরুল

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭

পারলেন না ইমরুল কায়েসও। এ বাঁ-হাতি ওপেনারকে জোর করে নিচে নামিয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত ভুল বলেই প্রতিয়মান হলো। সৌম্যকে জোর করে ওপেন করানো আর প্রতিষ্ঠিত ও সফল ওপেনার ইমরুল কায়েসকে নিচে নামানোর পরীক্ষা ব্যর্থ চন্দিকা হাথুরুসিংহের।

প্রথম ইনিংসে ৮ রানে সাজঘরে ফেরা সৌম্য দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মেজাজে ছক্কা হাকাতে গিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হবার কয়েক মিনিট আগে ক্যাচ তুলে বিদায় নিলেই হেড কোচ হাথুরুর গেম প্ল্যান, একাদশ সাজানো ও ব্যাটিং অর্ডার সাজানোর প্রথম পদক্ষেপ ব্যর্থতায় পর্যভূষিত হয় আর আজ তৃতীয় দিন সকালের সেশনে ইমরুল কায়েস মাত্র ২ রানে ফিরলে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ন হয় কোচ হাথুরুর।

সুপ্রতিষ্ঠিত ওপেনার। ওপেনিংই তার সেরা জায়গা। ধীরে সুস্থে বলের মেধা ও গুণ বিচার করে খেলার অবারিত সুযোগ। আর সবচেয়ে বড় কথা আপাতত কেউ প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না। এরকম একজন সেট ওপেনারকে নিচে নামানোর অর্থ, তার আস্থা, আত্ববিশ্বাস কমে যাওয়া। জোর করে ওপেনার থেকে টেনে হিচরে নিচে নামানো ইমরুলের কনফিডেন্সও গেছে কমে। অবস্থান হারানোর চিন্তা মাথায় ঢুকে গেছে। বার বার মনে হচ্ছে কি জানি, তিন নম্বরে ব্যর্থ হলে হয়তো জায়গাটাই হারিয়ে যাবে।

এমন দুচিন্তা মাথায় থাকলে কি আর ভালো খেলা যায়? যায় না। তার আদর্শ উদাহরন ইমরুল। একদম ফুটওয়ার্ক নেই। কি পেস, কি স্পিন, দুই ধরনের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে খেলতেই যেন কষ্ট হচ্ছে। প্রথম ইনিংসে জায়গায় দাঁড়িয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলে বিদায় নিয়েছিলেন। আর আজ স্পিনার লায়নের বলে কোনরকম ফুটওয়ার্ক না করে একদম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলে বিপদ ডেকে আনলেন। যে বলটি ডান পা বাড়ালে অনায়াসে ফ্রন্টফুটে ডিফেন্স করা যায়, সেই বল পা না বাড়িয়ে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গেলেন।

খারাপ সময়ে নাকি সব কিছুই বিপক্ষে যায়। ক্রিকেট সংস্কৃতিতে বহুল প্রচলিত কথা। সময় খারাপ হলে নাকি দিনের ও ম্যাচের সেরা ডেলিভারিটি তার বিরুদ্ধেই হয়। তার ব্যাট থেকে ওঠা কঠিনতম ক্যাচও নাকি প্রতিপক্ষ ফিল্ডাররা ধরে ফেলেন। এমনকি আম্পয়ারের ভুল সিদ্ধান্তটিও ব্যাটসম্যানের অফ ফর্মে বিরুদ্ধে যায়।

অন্যভস্ত পজিসনে ব্যাট করা ইমরুলেরও হয়তো তাই হল। যে ডেলিভারিতে আউট হলেন, তা গুডলেন্থে পড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি লাফিয়ে উঠলো। সামনের পায়ে আসলে হয়তো তবু শেষ রক্ষা হত। তখন বলকে মাটিতে রাখা যেত। কিন্তু ইমরুল জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট পেতে দেয়ায় খানিক লাফিয়ে ওঠা বল ব্যাটের একদম ওপরের অংশে লেগে চলে গেল স্লিপে।

আর এভাবেই পর পর দুই ইনিংসে ০ রানে সাজঘরে ফেরা ইমরুল আবারো ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে সাজঘরে। একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ওপেনারকে টেনে নিচে নামানোর পরিণতি যে ভালো হয় না, তা ইমরুলের শেষ তিনটি ইনিংসই (০+০+২) তার প্রমাণ।

এরপরও কি তাকে তিনেই খেলানো হবে? কোচ হাথুরু কি নিজের গেম প্ল্যানেই বহাল থাকবেন? তাহলে কিন্তু ইমরুলের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে। দেশ অকালে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ওপেনারের সার্ভিস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।

এআরবি/এমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।