হকারের ছেলে মাহবুবের অর্জন গোল্ডেন জিপিএ-৫


প্রকাশিত: ০৬:৫৮ এএম, ০১ জুন ২০১৫

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বানিয়াগাঁতী গ্রামের পত্রিকার হকার আব্দুল মালেক ও গৃহিণী শিউলী বেগমের ছেলে মাহবুব এ খোদা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বেলকুচি উপজেলার বানিয়াগাঁতী এসএন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সে জিপিএ-৫ লাভ করেছে।

তার এই অসামান্য সাফল্যে একদিকে যেমন তার পরিবারের সকলে আনন্দে আত্মহারা অপরদিকে এলাকাবাসীও আনন্দিত। মাহবুব এর সাফল্যে এলাকাবাসী একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়েছে।

বেলকুচি উপজেলার বানিয়াগাঁতী গ্রামের পত্রিকার হকার দরিদ্র আব্দুল মালেক। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে সাইকেলটি নিয়ে ঘর থেকে বের হন সকলের মাঝে সংবাদপত্র বিলি করতে। তার এই সামান্য আয় দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর দেখে স্ত্রী শিউলী বেগমও স্বামীকে একটু সহায়তা করতে তাঁতের ফ্যাক্টরিতে সুতা মাড়াই এর কাজ করেন।

পরিবারের অন্য সদস্য বোন ইশরাত জাহান মিম স্থানীয় স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। সংসারের খরচসহ ছেলে মেয়ের লেখাপড়া চালাতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হয়। মাহবুব তার মা বাবার এই কষ্ট অনুধাবন করতে পেরে সংসারে একটু স্বচ্ছলতা আনার জন্য মায়ের সাথে সেও সুতা মাড়াই এর কাজ করতেন। এভাবে চলতে চলতে এসএসসি পরীক্ষা চলে আসে। বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সে পরীক্ষায় অংশ নেন। ঘোষিত ফলাফলে সে জিপিএ-৫ পান। তার এই ফলাফলে এলাকাবাসীরাও গর্ববোধ করছেন।

এ ব্যাপারে মাহবুব এ খোদা বলেন, সংসারে দারিদ্র্যতা থাকা সত্ত্বেও ছোট থেকেই বাবা ও মা তাকে ভালো পড়াশোনার জন্য উৎসাহ জুগিয়ে এসেছেন। সেই সাথে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাও তার এই ভালো পড়াশোনার জন্য অবদান রেখেছেন ভবিষ্যতে তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান।

মাহবুবের বাবা আব্দুল মালেক জানান, ভোর থেকে জীবিকার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে হয়। যে কারণে মাহবুবের প্রতি তেমন দৃষ্টি দিতে পারেননি। ছোট বেলা থেকেই সে লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী ছিল। তাই সংসারে দারিদ্র্যতা থাকা সত্ত্বেও তার লেখাপড়া তিনি বন্ধ করেনি। ভালো ফলাফল করার কারণে খুশি হলেও আগামীতে কিভাবে লেখাপড়ার খরচ যোগাবেন এই নিয়ে তিনি চিন্তিত।

বানিয়াগাঁতী এসএন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানালেন, দারিদ্র্যতাকে হার মানিয়ে মাহবুব যে সাফল্য অর্জন করেছে সে যদি সমাজের কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পায় তা হলে ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে। তার এই ফলাফলে স্কুলের সবাই খুবই গর্বিত।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।