ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজন নিয়ে শঙ্কা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৭

মাঝে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা মহানগরের বড় অংশ ডুবে গিয়েছিল পানিতে। জলাবদ্ধতার কারণে কি নিদারুণ কষ্টই না পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর ঢাকার জলাবদ্ধতার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও পানির নিচে নারায়গঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়াম এবং এর প্রবেশ পথ ও মাঠের পাশের আউটার স্টেডিয়াম।

এখনো ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের ঠিক বাইরের বড় অংশ ডুবে আছে পানিতে। খুব সহসাই এ পানি সরে যাবে, সে সম্ভাবনাও নেই। প্রসঙ্গতঃ এবার প্রিমিয়ার লিগ চলার সময়ও অতি বৃষ্টিতে ফতুল্লা আউটার স্টেডিয়াম এবং এর মূল গেট থেকে ভিতরে ঢোকার পুরো পথ ঢুবে গিয়েছিল পানিতে। বৃষ্টির সাথে সুয়ারেজের পানি মিশে বিশ্রি ও উৎকট গন্ধে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়ে গিয়েছিল সবার।

পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণেই এই অবস্থা। এবারও গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণে অবস্থা আরও শোচনীয়। স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে আউটার স্টেডিয়ামের পুরো এলাকা পানির নিচে।

এ মাঠে নিকট ভবিষ্যতে কোন খেলার জন্য সূচি নির্ধারিত না থাকলে সমস্যা ছিল না; কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটি যে ওই মাঠেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা! দিন ক্ষণের হিসেব কষলে আর মাত্র তিন সপ্তাহ। এরপরই ফতুল্লা স্টেডিয়ামে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র ওয়ার্মআপ ম্যাচ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে।

এদিকে মাঠের বাইরে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বড় ধরনের ত্রুটি থাকায় জমে গেছে এবং তা মূল স্টেডিয়ামের ভেতরেও ঢুকেছে। এ অবস্থায় আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এ মাঠে দু’দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা যাবে কি না? প্রশ্ন সবার।

বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভুঁইয়াও চিন্তিত। তারও মনে খানিক সংশয়- আদৌ এ মাঠে খেলা আয়োজন সম্ভব হবে কি না?

আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান। সেখানে উপস্থিত সংবাদিকদের সাথে আলাপে তিনি খানিক সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘ফতুল্লায় খেলা হবার সম্ভাবনা নেই, সেটা আমরা বলবো না। আমরা (বিসিবি) ও গণমাধ্যম- সবাই ওই মাঠ নিয়ে কথা বলছি। তবে কোথায় গিয়ে যেন কাজটা এগুচ্ছে না। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অনেকবার মিটিং করেছে। বিসিবিও বহুবার চিঠি দিয়েছে; কিন্তু সে পর্যায়ের উন্নতি নেই।’

ফতুল্লা স্টেডিয়ামের মাঠের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে হানিফ ভুঁইয়া বলেন, ‘ফতুল্লার এখন যা অবস্থা তাতে ম্যাচ আয়োজন কঠিন। আমি নিজে সেখানে গিয়েছি। বুয়েটের একটি পর্যবেক্ষক দল গেছে। যদিও ১৮ আগষ্ট পর্যন্ত সময় আছে। তবে ওই সময়ের মধ্যে মাঠ সম্পূর্ণ তৈরি করা এবং খেলা উপযোগি করে তোলা কঠিন। রীতিমত চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে।’

মাঠ নিয়ে হানিফ ভুইয়ার উপলব্ধি, ‘ফতুল্লা স্টেডিয়াম আমাদের না। মাঠের মালিক ক্রীড়া পরিষদ। তাদের একটা বড় ভূমিকা আছে। আমরা মাঠের রক্ষনাবেক্ষণ করলে অন্য কথা। আজকেও বলেছি, ফতুল্লা স্টেডিয়াম বিসিবির মাঠ হলে বলতাম, ১৮ আগস্টের মধ্যে খেলা উপযোগি করে তোলা সম্ভব। আমি একা নই, বিসিবির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ক্রীড়া পরিষদের সাথে ফতুল্লা স্টেডিয়াম নিয়ে কথা হয়েছে। নতুন ক্রীড়া সচিব বিসিবি সভাপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিসিবি প্রধান বিষয়টি তুলে ধরেছেন। আমরা গত ছয় মাস ধরে চেষ্টা করছি, ফতুল্লা স্টেডিয়ামের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল করতে; কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।’

কেন এগুচ্ছে না? ‘আমাদের বলা হচ্ছে অনেক বড় কাজ করতে হবে। মূল সমস্যা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের আউটফিল্ডে নয়। সমস্যা হচ্ছে মূল স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথ দিয়ে মাঠে ঢোকার যে বড় এলাকা এবং আউট ফিল্ড- সেখানে বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। সে পানি নিষ্কাশনের ভাল ব্যবস্থা নেই। এমনকি সুয়ারেজের পানিও ঢুকে যায়। সে পানি বেশি সময় থাকায় ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। এমনকি স্টেডিয়ামের পিচেও চলে যাচ্ছে। এই পানি জমে থাকার সমস্যা বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটি বা বোর্ডের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়।’

হানিফ ভুঁইয়ার শেষ কথা, ১৮ আগস্টের মধ্যে ফতুল্লা স্টেডিয়াম খেলা উপযোগি করা না গেলে বিকল্প মাঠে হবে প্রস্তুতি ম্যাচ। সেটা বিকেএসপি কিংবা শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেও হতে পারে।

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।