অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড : জড়িতদের গ্রেফতারে ব্যর্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী


প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ২৬ মে ২০১৫
ফাইল ছবি

বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ‘জড়িত’ ৫ জঙ্গিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থা। জঙ্গিদের ধরতে বিভিন্ন বাহিনী অভিযান পরিচালনার কথা জানালেও উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি নেই এই মামলায়।

‘অভিজিৎ রায়কে হত্যার সঙ্গে জড়িত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৫ সদস্যকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।’ মে মাসের ৪ তারিখে সাংবাদিকদের এমনটি জানিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
 
তবে এর তিন সপ্তাহ পরেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি শনাক্তকৃত কোন আসামিকে। গ্রেফতার দূরের কথা আসামিদের নাম-পরিচয়ও জানতে পারেনি পুলিশ।
 
পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার (ডিসি) জাগো নিউজকে বলেন, ‘তাদের গ্রেফতারে কিংবা মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন আপডেট নেই। এখনো পাওয়া যায়নি আসামিদের পরিচয়।’
 
এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত কুপিয়ে হত্যা করে অভিজিতকে। এঘটনায় গুরুতর আহত হন অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।
 
ঘটনার পরদিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ‘আনসার বাংলা ৭’ নামে একটি সংগঠন। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অজয় রায়।
 
হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন পর শফিউর রহমান ফারাবী নামে একজনকে গ্রেফতার করে র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)। অভিযোগ ছিল ফারাবী সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকবার অভিজিতকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। একজনকে গ্রেফতার ছাড়া এই মামলায় এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি নেই।
 
হঠাৎ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আল-কায়েদা একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে। ভিডিও বার্তার প্রেক্ষিতে পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আল-কায়েদা নয় বরং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমই এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত কমপক্ষে ৫ জনকে শনাক্ত করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।’ তবে হত্যাকাণ্ডের তিন মাসেও মিললো না সেই ৫ জনের সন্ধান।
 
অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে পৃথক একটি মামলা দায়ের হবে দেশটিতে। আরও তাই এ হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেসন্স (এফবিআই)। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করলেও বাংলাদেশ পুলিশের সহায়তার জন্য এগুলো এখনো দেশে পাঠায়নি তারা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে তদন্ত ব্যবস্থা।
 
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এফবিআই ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট পাঠাবে। এরপর তদন্ত আরো বেগ পাবে।’
 
তদন্তের গতি দেখে ‘নাখোশ’ অভিজিতের বাবা শিক্ষাবিদ অজয় রায়। হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র-শিবিরের কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতাসহ কয়েকটি বিষয়ে নিজের অনুসন্ধানের তথ্য তিনি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তুলে ধরেছেন। তবে ৩ মাসেও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ তিনি।  অজয় রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে নানান কথা বলা হচ্ছে। তদন্তের গতি দেখে আমি হতাশ।’

এআর/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।