আমাদের অর্থ দরকার নেই, সন্তানদের ফিরিয়ে দাও


প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ২৪ মে ২০১৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকা থেকে মালয়েশিয়াগামী ৬ যুবকের সন্ধান মিলছে না। জানা গেছে প্রায় আড়াই মাস ধরে পরিবারের সদস্যরা তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। অবৈধভাবে মালয়েশিয়া গিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করবে এমন আশা নিয়েই স্থানীয় দালালের মাধ্যমে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তারা।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় রওনা হওয়ার পর থেকে সন্তানদের কোন খোঁজ-খবর না পেয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। এখন অভিভাবকদের কথা, আমাদের অর্থ দরকার নেই, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দাও।

স্থানীয় দালাল চক্র এসব বিপদগামী পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে চলেছেন। দালালরা বলছেন, যারা নিখোঁজ রয়েছেন, ২ লাখ ৪০ হাজার করে টাকা দিলে হয়তো মালয়েশিয়া পৌঁছে দেয়া হবে। নয়তো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এ পরিবারগুলো দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

নিখোঁজরা হলেন, চারিতালুক গ্রামের জিয়াদুল মিয়ার ছেলে শহিদুল্লাহ মিয়া (২৩), এমারত হোসেনের ছেলে হৃদয় (২২), মোছলেহ উদ্দিনের ছেলে গোলজার হোসেন (২৫), নুরুল হকের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (২৮) রাশেদ মিয়ার ছেলে নিরব মিয়া (২০) ও সেরাজল ইসলামের ছেলে  ফাইজুল হক (২৩)।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের  সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত আড়াই মাস আগে কুড়াইল এলাকার খায়রুল ইসলামের ছেলে দালাল রুবেল মিয়া ওই ৬ যুবককে মালয়েশিয়া নেয়ার প্রলোভন দেখান। মালয়েশিয়া নেয়া বাবদ দালালদের সঙ্গে যুবকদের ২ লাখ টাকা করে চুক্তি হয়। প্রথমে ৩০ হাজার টাকা করে দেবে, পৌঁছানোর পর বাকি টাকা পরিশোধ করতে হবে। পরে যুবকরা ওই দালালকে ৩০ হাজার টাকা করে দেন। দালাল রুবেল মিয়া পার্শ্ববর্তী আদলারটেক এলাকার শাহজাহানের ছেলে। অপর দালাল হানিফ মিয়ার কাছে ওই ৬ যুবককে বুঝিয়ে দেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মালয়েশিয়াগামী সন্তানদের না পেয়ে অভিভাবকরা ওই দালালদের কাছে গেলে তারা জানান, অপর দালালদের কাছে যুবকদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের জানা নেই তারা কোথায় আছেন।

গত এক সপ্তাহ আগে একটি মোবাইল নম্বর থেকে শাহ-আলী নামে এক দালাল নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের কাছে ফোন করে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দেয়া হলে ওই যুবকদের হয়তো মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। নয়তো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিরীহ খেটে খাওয়া অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দিন আহাম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ওই ৬ যুবকের মতো আরো যুবকদের প্রলোভন দেখানো হয়েছে। তাদের কোথায় নিয়ে গেছে, কেমন আছে, তারা বেঁচে আছে না মরে গেছে তারও কোনো খোঁজখবর নেই। তারপরও আমরা  এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি।

মীর আব্দুল আলীম/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।