চীনের ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করছে বিকেএসপি


প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ৩০ জুন ২০১৭

চীনের বিখ্যাত শেনইয়াং স্পোর্টস ইউনিভার্সির সঙ্গে ক্রীড়া উন্নয়ন চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত চীনের এ ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ার অন্যতম ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।

অলিম্পিকসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক গেমসে চীনের স্বর্ণপদক জয়ী ক্রীড়াবিদদের বেশিরভাগই বেরিয়ে আসেন এ ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রীড়া উন্নয়ন চুক্তি করতে যাওয়া বিকেএসপির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবেই দেখছেন অনেকে। আগামী সপ্তাহে দুই দেশের দুই ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

এ জন্য শেনইয়াংয়ের ওই বিশ্ববিদ্যালয় সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুর রহমানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রোববার চীন যাচ্ছে। প্রতিনিধি দলের অন্য ৬ জন হচ্ছেন- ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (যুব) মো. আজিজুল হক, বিকেএসপির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মোশারফ হোসেন মোল্লা, বিকেএসপির সহকারী অধ্যাপক (পদার্থ বিদ্যা) বেগম শামীমা সুলতানা, উপ-পরিচালক (ক্রীড়া বিজ্ঞান) বেগম নুসরাৎ শারমিন এবং ফুটবলের প্রধান কোচ উজ্জ্বল চক্রবর্তী।

তো কী থাকছে এ চুক্তিতে? বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুর রহমান শুক্রবার জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘বিকেএসপিতে আমাদের ১৭টি ডিসিপ্লিন আছে। এর মধ্যে এক ক্রিকেট ছাড়া সব খেলাতেই আমাদের চেয়ে ভালো চীন। আর যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমরা চুক্তি করতে যাচ্ছি সেখান থেকেই চীনের সব বড় বড় ক্রীড়াবিদ তৈরি হয়। দেশটির যে সব ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকে গোল্ড পান তাদের সিংহভাগই শেনইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের। আসলে আমাদের কাছ থেকে তো ওদের বেশি পাওয়ার নেই। আমাদের লক্ষ্য থাকবে এ চুক্তির আওতায় যত বেশি সম্ভব উপকৃত হওয়া।’

চুক্তির খসড়া শেনইয়াং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে আগেই। বিকেএসপি চুক্তির ধারাগুলো নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাও করেছে। এখন চীন গিয়ে ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন করে তারপর সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করবেন কর্মকর্তারা।

বিকেএসপির মহাপরিচালক বলেছেন, ‘শেনইয়াং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি যদি চায় তাদের বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট দল আমাদের এখানে পাঠাবে তাহলে আমরা তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেবো। ক্রিকেট ছাড়াও আমাদের আরো যে ১৬টি খেলা আছে তার সবগুলোতেই ক্রীড়াবিদ ও কোচ বিনিময়ের সুযোগ থাকবে। আমাদের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের ক্রীড়াবিদ সেখানে পাঠাবো প্রশিক্ষণের জন্য। চাইলে তারাও পাঠাতে পারবে। একইভাবে কোচও বিনিময় হবে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। আমাদের ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য চীনের বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের বিশেষজ্ঞ পাঠাবে।’

চুক্তিটা ঠিক কত বছরের জন্য হবে তা নির্ভর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বোঝাপড়ার উপর, ‘আমরা আপাতত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করছি। চুক্তিটা আসলে কতদিনের হবে সেটা আলোচনা সাপেক্ষে। ওখানে গিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন, সুযোগ সুবিধা দেখবো। তারপর সিদ্ধান্ত হবে কতদিনের চুক্তিতে যাবো আমরা। তবে এটা ঠিক, চুক্তির মেয়াদ যে কয় বছরেরই হোক, সেটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি হবে বলেই মনে করি। কারণ আমাদের আর কী দেয়ার আছে চীনকে?’- বলেছেন বিকেএসপির মহাপরিচালক।

বিকেএসপি আগামী বছর থেকে চালু করতে যাচ্ছে ব্যাসেলর অব স্পোর্টস বিভাগ। পর্যায়ক্রমে এ বিভাগের উপর মাস্টার্সও চালু করবে প্রতিষ্ঠানটি। ‘আমরা ২০১৮ সালেই অনার্সে ছাত্র ভর্তি শুরু করবো। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে চুক্তি হলে আমাদের নতুন এ বিভাগের জন্য বেশ কাজে আসবে’- বলেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুর রহমান।

আরআই/আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।