বাংলাদেশে আসতে পারবে তো স্মিথ-ওয়ার্নাররা


প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, ৩০ জুন ২০১৭

২০১৫ সালে বাংলাদেশে সফরে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের। তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং গুলশানে ইতালি নাগরিক সিজার তাভেল্লা নিহত হওয়ার ঘটনার পর নিরাপত্তার সংহটের অজুহাত তুলে বাংলাদেশ সফরে আসলো না অস্ট্রেলিয়া। এরপর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড সিএ। অথচ, বাকি দলগুলো এসে দিব্যি বিশ্বকাপ খেলে গিয়েছে।

ঠিক এক বছর আগে গুলশানের হলি আর্টিজানের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার পর ঘটনার পরও বাংলাদেশে সফর করে গিয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। বাংলাদেশে এরই মাঝে অনুষ্ঠিত হয়েছে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি। সফরে এসেছে জিম্বাবুয়ে, অনুষ্ঠিত হয়েছে বিপিএল।

অবশেষে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল বাংলাদেশে আসতে রাজি হয়েছে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার জন্য আগামী আগস্টেই বাংলাদেশে আসার কথা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের। বাংলাদেশ সফরের লক্ষ্যে দলও ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড।

কিন্তু ঠিক মাস দেড়েক আগেই আবার গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাতে, শুধু বাংলাদেশ সফর কেন, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের আগামী আরও কয়েকটি সিরিজও পড়ে গিয়েছে গভীর অনিশ্চয়তায়। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার জন্য সবচেয়ে আইকনিক অ্যাশেজ সিরিজও পড়েছে অনিশ্চয়তায়। কারণ, আগামী নভেম্বরেই শুরু হওয়ার কথা অ্যাশেজ সিরিজ।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ক্রিকেটারদের অ্যাসোসিয়েশনের যে চুক্তি রয়েছে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে আজই। এর ফলে আগামীকাল সকাল থেকেই স্মিথ-ওয়ার্নার হয়ে যাবেন বেকার। তারা আর অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের ক্রিকেটার থাকবেন না। শুধু জাতীয় দলের ক্রিকেটারেই নন, অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ২০০ ক্রিকেটার কাল থেকে বেকার হয়ে যাবেন।

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য যথেষ্টই দিতে চায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এমনটা চান না। তাদের ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন যেটা রয়েছে, তাদের দাবি রাজস্ব আয়ের অংশ জাতীয় দলে খেলা এবং এর বাইরে থাকা সবার মাঝেই ভাগ করে দিতে হবে। যাতে তৃণমূল পর্যায়ের ক্রিকেটাররাও লাভবান হতে পারেন।

এ বিষয়েই মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে ক্রিকেটার এবং বোর্ডের মাঝে। এ নিয়েই এমন অচলাবস্থার সৃষ্টির। ক্রিকেটাররা যদি নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর না করেন, তাহলে তারা আর জাতীয় দলে থাকছেন না। বিকল্প একটি দল গঠন করবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, তারও উপায় নেই। কারণ, অন্তত ২০০’র মত ক্রিকেটার চুক্তির বাইরে চলে যাচ্ছেন।

সিএ’র সঙ্গে ক্রিকেটারদের এই বিরোধের জের খুব সহসাই পড়তে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ওপর। ‘এ’ দলের জন্য ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের সোমবার রিপোর্ট করার কথা। এই দলের অধিনায়ক উসমান খাজাসহ অনেকেই ছিলেন পুরনো চুক্তিতে। আর এই সিরিজটির জন্য ইতিমধ্যেই সব ধরণের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরে দুটি চারদিনের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে দু’দলের মধ্যে। এরপর ভারতীয় ‘এ’ দলকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এরপরই রয়েছে জাতীয় দলের বাংলাদেশ সফর। যদিও বাংলাদেশে আসার তারিখটা আগস্টের ১৮। তার এক সপ্তাহ আগে, ১০ আগস্ট ডারউইনে বাংলাদেশের কন্ডিশন তৈরি করে এক সপ্তাহ অনুশীলন করার কথা স্মিথ-ওয়ার্নারদের। কিন্তু চুক্তির শর্তের বিষয়ে দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে সব কিছুই পড়ে গিয়েছে গভীর অনিশ্চয়তায়।

সংকটের সমাধান না হলে কাদেরকে বাংলাদেশ সফরে পাঠাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া!

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।