নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় টাইগারদের


প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ২৪ মে ২০১৭

কত স্বপ্ন আর কত আকাঙ্খা জড়িয়ে ছিল এই একটি ম্যাচ ঘিরে। এই একটি ম্যাচে হবে অনেক অর্জন। মোটা দাগে বললে তিনটি বড় বড় অর্জন তো হবেই বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডই একমাত্র দেশ বাকি ছিল, যাদেরকে বিদেশের মাটিতে পরাজয়ের স্বাদ দিতে পারেনি বাংলাদেশ। সেই অপূর্ণ স্বাদ আস্বাদন করা। একই সঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে শ্রীলংকাকে পেছনে ফেলে ছয় নম্বরে উঠে যাওয়া এবং সর্বশেষ বড় প্রাপ্তি, ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা নিশ্চিত করে ফেলা।

ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সবগুলো অর্জন একসঙ্গে ব্যাগ পুরে নিলো মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। কিউইদের ছুড়ে দেয়া ২৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দিকে জয়ের নায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল এবং সাব্বির রহমান। দু’জনের ১৩৬ রানের অসাধারণ এক জুটি বাংলাদেশকে জয়ের ভিত তৈরি করে দেয়। মাঝে চারটি উইকেট টানা পড়ে গেলেও দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭২ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বহু আকাংখিত জয়টি উপহার দেন। শেষের নায়কে পরিণত হন দুই ভায়রা ভাই।

গত ডিসেম্বর থেকে এ নিয়ে পঞ্চমবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে আগের চারবারই হেরেছে মাশরাফি বিন মর্তুজারা। কিউদের বিপক্ষে পরাজয়ের এই বৃত্তটা ভাঙা খুব প্রয়োজন ছিল। অবশেষে সেই অধরা জয়টি ধরা দিল টাইগারদের হাতে। ডাবলিনের ক্লনটার্ফে কিউইদের ৫ উইকেটে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়টা তুলে নিল টিম বাংলাদেশ।

১৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ। ৭রানের মাথায় আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার। টাইগাররা উইকেট হারানোর ধকল সামলে উঠেছে তামিম-সাব্বিরের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে। এই জুটিতে বাংলাদেশ পায় ১৩৬ রান। জুটি ভাঙল তামিম আউট হওয়ার পর। মিচেল স্যান্টনারের বল মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হাশিম বেনেটের তালুবন্দি হন তামিম। তার আগে ৮০ বল খেলে করেন ৬৫ রান।

তামিমের বিদায়ের পর খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারলেন না সাব্বির রহমানও। মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউটে কাটা পড়লেন সাব্বির। ৮৩ বল খেলে তিনি করেন ৬৫ রান। তিনি রানআউটের কাটা পড়েন।

এরপর ১০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। দলীয় ১৬০ রানের মাথায় জিতান প্যাটেলের বলে প্যাডে বল লাগিয়ে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর উইকেটে নামা সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহীম মিলে চেষ্টা করেন ৩৯ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার। দলীয় ১৯৯ রানের মাথায় আউট হয়ে যান সাকিব আল হাসানও। হামিশ বেনেটের বলে লং লেগ অঞ্চলে তার ক্যাচ ধরেন মিচেল সান্টনার।

সাকিব আউট হওয়ার পরই জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম। দু’জনের জুটিতেই বাংলাদেশ ফিনিশিং টাচে গিয়ে পৌঁছায়। ৬০ বল খেলে এ দু’জন এই জুটিটা গড়ে তোলেন। শেষ পর্যন্ত তারা দু’জনই জয় নিয়ে ঘরে ফিরলেন।

২৭১ রানের লক্ষ্য। তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের। দলীয় ৭ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার। তিনি শিকার জিতান প্যাটেলের। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে সজোরে ব্যাট চালাতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার কোরি অ্যান্ডারসনের হাতে ধরা পড়েন বাংলাদেশি ওপেনার।

এদিকে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন নিউজিল্যান্ডের তিন ব্যাটসম্যান। টম ল্যাথাম, নেইল ব্রুমের পর রস টেলর। এই তিন ফিফটিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭০ রান তোলে নিউজিল্যান্ড।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।