আবাহনীই সবচেয়ে এনার্জিটিক দল : খালেদ মাসুদ


প্রকাশিত: ০৭:১৩ এএম, ২৪ মে ২০১৭

নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার কিছুই নেই। তবে কঠিন সত্য হলো, ইংল্যান্ডে কন্ডিশনিং ক্যাম্প, আয়ারল্যান্ডের তিন জাতি টুর্নামেন্ট আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সব বড় দলের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে। শিরোপা প্রত্যাশী তথা সুপার লিগে উঠে আসা সব দলই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সংখ্যাতত্বে আবাহনীর সর্বাধিক চার ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক সৈকত, তাসকিন আহমেদ ও সাঞ্জামুল ইসলাম নয়ন দেশের বাইরে  আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে। এর বাইরে মোহামেডান ও প্রাইম ব্যাংকের তিনজন করে ক্রিকেটারও সেখানে।

তবে এর মধ্যে প্রাইম ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। দলটির তিন প্রধান স্তম্ভ সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান ও রুবেল হোসেন নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, সৌম্য-সাব্বির এ মুহূর্তে টিম বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ের অন্যতম নির্ভরতা। দু`জনই দুর্দান্ত স্ট্রোক মেকার। আলগা বল পেলেতো কথাই নেই, ভালো বলকে ইচ্ছেমত আক্রমণাত্মক শট খেলাতেও যারা সমান দক্ষ। যাদের চওড়া ও ধারালো উইলোর সামনে পড়লে যেকোনো বোলিং শক্তি তছনছ হয়ে যায়। তাদের সঙ্গে ফাস্ট বোলার রুবেল হোসেন গতি, বলের কারুকাজকে মানদণ্ড ধরলে অনেকের মতে এ মুহূর্তে দেশের অন্যতম সেরা ও কার্যকর ফাস্ট বোলার।

এবারের লিগে তার প্রমাণও মিলেছে। এমন তিন তিনজন কার্যকর পারফরমার চলে যাবার পরও প্রাইম ব্যাংক কিন্তু নুয়ে পড়েনি। এখনো মূল লড়াইয়ে টিকে আছে। এবং সেটা ভালো খেলেই। প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে গাজী গ্রুপকে হারিয়ে শিরোপা লড়াই জমিয়ে দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। অনেকেরই ধারণা, তীক্ষ্ণ ক্রিকেট বুদ্ধি সম্পন্ন খালেদ মাসুদ পাইলট প্রাইম ব্যাংকের এতদূর উঠে আসার পেছনে রেখেছেন অন্যতম কার্যকর ভূমিকা। মাঠে ক্রিকেটাররা খেললেও খালেদ মাসুদ পাইলটের গেম প্ল্যান ও প্রতিপক্ষের শক্তি-সামর্থ্য এবং উইকেটের চরিত্র বুঝে লক্ষ্য-পরিকল্পনা স্থির করাটা দলেল সাফল্যে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

সুপার লিগে কেমন করবে প্রাইম ব্যাংক ? হারানো শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পারবে? ‘পারবো। বা পারবো না’ সরাসরি এমন মন্তব্য করেননি খালেদ মাসুদ পাইলট। দলটির এবারের দৌনাচার্য্য খালেদ মাসুদ পাইলট নিজ দলের সম্ভাবনা নিয়ে খুব বেশি বড় গলায় কথা বলেননি। বরং তার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও আবাহনীর সম্ভাবনা বেশি।

pailot

কাল রাতে (মঙ্গলবার) জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সুপার লিগে উঠে আসা ছয় দলের মধ্যে কোন দলের সম্ভাবনা বেশি মনে হয় আপনার? খালেদ মাসুদের সোজা সাপটা জবাব, ‘আমার কাছে মনে হয় সুপার লিগে যে ছয় দল খেলছে, তাদের শক্তি মোটামুটি কাছাকাছি। তবে আমি বরং গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের চেয়ে আবাহনীকে এগিয়ে রাখতে চাই। আবাহনীর যে দলটি খেলছে, পুরোপুরি তারুণ্য নির্ভর। এক ঝাক তরুণ, উচ্ছল ও অফুরা প্রাণশক্তির দল। আমার মনে হয় লিগে সবচেয়ে এনার্জিটিক দলই আবাহনী। এই গরমে এনার্জি ক্ষয় হবে বেশি। রোদের ঝাঝালো তাপ ও ঘামে ক্রিকেটারদের শরীর দূর্বল হয়ে পড়ছে। সেই দূর্বলতাকে অতিক্রম করতে দরকার বাড়তি প্রাণশক্তি। আমার মনে হয় আবাহনীর লাইন আপে আছে সে অফুরান প্রাণশক্তি। কাজেই আমি সুপার লিগে আবাহনীর সম্ভাবনা বেশি মনে করছি।’

শুধু প্রাণশক্তি বেশি বলেই নয়, প্রাইম ব্যাংক কোচের ধারণা, দল হিসেবেও আবাহনী বেটার। প্রশ্ন ছিল, সবার ওপরে থাকা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স কি এবারের লিগে এখন পর্যন্ত সেরা দল? তার জবাব দিতে গিয়ে প্রাইম ব্যাংক কোচ খালেদ মাসুদ বলেন, ‘আমার তা মনে হয় না। আমার তো মনে হয় আবাহনীই তুলনামুলক বেটার সাইড।’

তাহলে আপনার দল প্রাইম ব্যাংককে কোথায় রাখবেন ? পাইলটের জবাব, ‘আমার দলও ভালো। ক`জন ভালো মানের ক্রিকেটার আছে। তবে নিজ দল সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন, সামর্থ্যের সেরাটা খেলতে পারেনি তারা। সর্বোচ্চ সামর্থ্যের ৮০ ভাগ উপহার দিতে পেরেছে। দলটির আরও ভালো খেলার সামর্থ্য আছে। আমি চাই ছেলেরা মাঠে সামর্থ্যের সবটুকুর প্রমাণ দিক। আমার বিশ্বাস, তাহলে আরও বেটার কিছু হবে।’

সেই বেটারটা কি চ্যাম্পিয়ন হবার মত? খালেদ মাসুদ পাইলটের অন্যরকম জবাব, ‘আমি বিশ্বাস করি আমার দল এখনো সামর্থ্যের শতভাগ উপহার দিতে পারেনি। যদি পারে তাহলে পারফরমেন্স উন্নত হবার পাশাপাশি ফলও ভালো হবে। তখন সাফল্যের নাগাল দেখা মিলতেও পারে। তবে আসল ও শেষ কথা হলো ভালো খেলতে হবে। সুপার লিগে যে ছয় দল উঠে এসেছে, তাদের প্রায় সবার শক্তিই কাছকাছি। কাজেই নির্দিষ্ট দিনে প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো খেলতে না পারলেতো আর জেতা যাবে না।’

এআরবি/এমআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।