আইপিএলে না খেলে মোস্তাফিজের ‘শাপেবর’ : খালেদ মাহমুদ


প্রকাশিত: ০২:০৪ পিএম, ১৯ মে ২০১৭

ক্যারিয়ার শুরুই (২০১৫ সালের ১৮ জুন ভারতের বিরুদ্ধে) শেরে বাংলায় ৫ উইকেট দিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যাওয়া (২১ জুন) একই মাঠে ৬ উইকেট। তারপর ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের সঙ্গে শেষ ৫ উইকেট পাওয়া। এরপর সাত ম্যাচে আর ৫ দূরে থাক চার উইকেট পাননি। আজ আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে ২৩ রানে ৪ উইকেট পাওয়া।

শুধু চার উইকেট পাওয়াই নয়। কাঁধের অপারেশনের পর আবার বল হাতে দূর্বার। সেই মাপা লাইন ও লেন্থে বল ফেলা। মাঝে মধ্যে গতির রদবদল বা বৈচিত্র। কখনো স্লোয়ার ছুড়ে ব্যাটসম্যানকে বেকায়দায় ফেলে দেয়া। সব মিলে যেন চেনা মোস্তাফিজ।

ভক্ত-সমর্থক সবার মুখে হাসি। নিশ্চয়ই কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা সবাই খুশি। হয়তো ড্রেসিং রুমে সবার প্রশংসায় ধন্য এখন কাটার মাষ্টার।

এদিকে মোস্তাফিজের বোলিংয়ে যারপরনাই খুশি খালেদ মাহমুদ সুজন। মধ্যাহ্ন বিরতির সময় মোস্তাফিজের বোলিংয়ে নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে জাতীয় দলের বর্তমান ম্যানেজার ও সাবেক অধিনায়ক বলেন, সত্যিই অনেক দিন পর দারুণ বোলিং করেছে মোস্তাফিজ। তবে এমন আগুন ঝড়ানো বোলিংকে অস্বাভাবিক মানতে নারাজ খালেদ মাহমুদ। তার বোধ, উপলব্ধি, মোস্তাফিজ অনেক বড় মাপের বোলার। অপারেশনের ধকল কাটাতে সময় লেগেছে। আর সবচেয়ে বড় কথা আইপিএলে গিয়ে দীর্ঘ সময় বসে থাকাটাও ‘ শাপেবর হয়েছে।’

মোস্তাফিজের আজকের বোলিং সম্পর্কে খালেদ মাহমুদের মূল্যায়ন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল মোস্তাফিজ এ সফরের ফিরে আসবে। বলতে পারেন আমি জানতাম ও আয়ারল্যান্ডে ভালো বল করবে। দেখবেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভালো করেবে। ভাবছেন আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের ঠাণ্ডা আবহাওয়া, কনকনে বাতাস আর ঘাসের উইকেট বুঝি তাকে বাড়তি সাহায্য করবে। নাহ, আমি ঠিক ঐ আলোকে বলছি না। শুধু কন্ডিশনের কারণে নয়। মোস্তাফিজ আসলে আহত বাঘ। আগেরবার যে আইপিএল খেলতে গিয়ে হায়দরাবাদকে চ্যাম্পিয়ন করে হিরো হয়ে দেশে ফিরেছে। এবার সেই আসরের প্রায় পুরো সময় বসে থাকতে হয়েছে। একদিন ৩ ওভার বল করে আর মাঠে নামা হয়নি। এটা ওর ক্যারিয়ারে প্রথম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরুর পর থেকে মোস্তাফিজ শুধু আলোই ছড়িয়েছে। অন্ধকার কি জিনিস তা দেখেনি। ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময় সাফল্যই ছিল সঙ্গী। এই রমরমা দিনই যে শেষ নয়। ক্যারিয়ারে আরও একটা দিক ও যে আছে, সেটা এতকাল দেখা হয়নি।

এবারের আইপিএল খেলতে গিয়ে তা দেখেছে মোস্তাফিজ। বুঝেছে আলোর বিপরীতে অন্ধকারও থাকে। চাতক পাখি যেমন বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকে, এবার আইপিএলে ঠিক তেমনি মোস্তাফিজও অপেক্ষায় ছিল, কখন মাঠে নামবো। পুরো আইপিএল অপেক্ষায় অপক্ষোয় কেটে গেছে। আর সুযোগ মেলেনি। এই সুযোগ না পাওয়াটাই মনে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে। নাহ, খেলতে না পারার যন্ত্রণা নয়। আমার মনে হয় মোস্তাফিজের ভেতরে এক ধরণের জেদ জন্ম নিয়েছে। ভালো করার ইচ্ছা প্রবল হয়েছে। বলতে পারেন, আইপিএল খেলতে না পারাটা তার ভেতরে শুধু ধাক্কাই দেয়নি। একটা অন্যরকম প্রতিক্রিয়ারও সৃষ্টি করেছে।   এ ধাক্কা নিজেকে নতুন করে তৈরির। এ ধাক্কা আবার বল হাতে আগুন ঝড়াবার জোর তাগিদ। সব মিলে তার ভেতরে ভালো করার সংকল্প জেগেছে। তারই ফলশ্রুতি আয়ারল্যান্ডে বল হাতে জ্বলে ওঠা। খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আগের ম্যাচেও দুর্দান্ত বোলিং করেছে। আর আজ যেন ঠিক সেই আগের মোস্তাফিজ। একটা চেইন ও লাইনে বল করা। আগের মত স্লোয়ারে ব্যাটসম্যানদের বিব্রত ও বেকায়দায় ফেলেছে। সব মিলে আবার সেই চেনা মোস্তাফিজ।’

এআরবি/এমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।