অভিনন্দনে ভাসছেন রুবেল মিয়া
বেঙ্গালুরু বধের পর দুই দিনের ছুটি আবাহনীর ফুটবলারদের। বুধবারের রাতটা কাটিয়েই ভোরে একজন বাদে সবাই চলে গেছেন পরিবারের কাছে। ক্লাবে থেকে যাওয়া একমাত্র ফুটবলার রুবেল মিয়া। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যেতে-আসতেই তো দুই দিন লাগে। তাইতো সতীর্থরা যখন দুই দিনের ছুটি কাটাতে চলে গেছেন, তখন ক্লাবে সময় কাটাচ্ছেন এ বছর চট্টগ্রাম আবাহনী ছেড়ে ঢাকা আবাহনীতে যোগ দেয়া রুবেল।
ক্লাবে সতীর্থদের কেউ না থাকলেও বৃহস্পতিবারের দিনটা অবশ্য একাকী কাটেনি এ তরুণ ফরোয়ার্ডের। সকাল হতে না হতেই বিভিন্ন জনের ফোন। বন্ধু-বান্ধব, ক্লাবের সমর্থক আর গণমাধ্যম কর্মীদের একজনের ফোন রাখা মাত্রই বেজে উঠে আরেকটি। দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে অভিনন্দন। নিজ এলাকার মানুষও আছেন। আবাহনী ক্লাবে দুপুর নাগাদ অনেক গণমাধ্যমকর্মীও হাজির। সবার প্রশ্ন যেন মিলে যাচ্ছিল এক বিন্দুতে- কিভাবে করলেন ওই দর্শনীয় গোল।
আসলেই দর্শনীয়। প্রায় মাঝমাঠ থেকে শট নিয়ে বল পাঠিয়ে দিলেন বেঙ্গালুরু এফসির জালে। বুবধার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রুবেল মিয়ার গোলটি ছিল অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে। যখন আবাহনী এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে। রুবেলের গোলটি কেবল আবাহনীর জয়টাই বড় করেছে। তারপরও ওই গোলটিই বেশি আলোচনায়। কারণ বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছ থেকে এমন গোল কমই দেখা যায়। ‘আমার এক বন্ধু তো ফোন করে বলল ‘তুই বেকহামের মতো গোল করেছিস’-বলতে গিয়ে হাসি যেন থামছিলই না রুবেলের মুখের।
এ হাসিটা কেবল রুবেলের মুখেরই নয়, দেশের ফুটবলেরও। দেশের ফুটবলে এখন ভাগ্য নির্ধারণ করেন বিদেশিরা। বুধবার এএফসি কাপের ওই ম্যাচে দুই ক্লাবের ছিলেন ৬ বিদেশি। সবাইকে ছাপিয়ে নায়ক বাংলাদেশের দুই ফুটবলার রুবেল মিয়া ও সাদ উদ্দিন। দুই জনের গোলই ছিল দর্শনীয়। তবে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে শট নিয়ে গোল করে সবার নজর কেড়েছেন রুবেল মিয়া। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরাও যে এমন গোল করতে পারেন। লাল-সবুজ জার্সি তো ডাকবেই তাদের।
নি:সন্দেহে গোলটি অসাধারণ! কিন্তু সেটাকে সাধারণ বলছেন গোলদাতা রুবেল, ‘তেমন কঠিন কিছু তো ছিল না। এমন গোল আমার আরও আছে। ব্রাদার্সে থাকাকালীন করেছিলাম শেখ জামালের বিপক্ষে।’ সেই গোল আর এই গোলের পার্থক্যটাও বললেন রুবেল, ‘ব্রাদার্সের হয়ে গোলটি করেছিলাম গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে। এবার করলাম অনেক দূর থেকে। তাছাড়া এটা তো আন্তর্জাতিক গোল।’
অনেক দূর থেকে বল মেরে আপনি কি নিশ্চিত ছিলেন বলটি জালেই যাচ্ছে? ‘আমি শট নিয়েই কিন্তু আনন্দ শুরু করেছিলাম। মানে নিশ্চিত ছিলাম গোল হবে’-জবাব রুবেল মিয়ার। আপনার আশপাশে তো কেউ ছিলেন না। তবে অতো দূর থেকে মারাটা কি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। আপনি তো আরও এগোতে পারতেন তাই না? রুবেল মিয়ার মুখে হাসি, ‘এমনতো হতে পারতো সময় নিলে কেউ পেছন থেকে এসে ফাউলও করতো। আমি সে সুযোগ দেব কেন? তাইতো যখন বুঝলাম এখন বল মারলে জালেই যাবে, ঠিক তখনই বলটি ভাসিয়ে দিলাম। ব্যাস।’
আরআই/এনইউ/আরআইপি