ভূমিকম্প আতঙ্কে সচিবালয় ফাঁকা
ভূমিকম্পের আতঙ্কে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ঘটেছে তুলকালাম কাণ্ড। বহুতল ভবন ২০ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে পড়েন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। বাদ যাননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। সবার চোখে-মুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ। সচিবালয়ের প্রতিটি ভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা নিচে অবস্থান করেন।
দুপুর ২টার পরে তারা স্ব স্ব অফিসে প্রবেশ করেন। আবার কোনো কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী আর অফিসে ঢোকেননি। রোববার বেলা ১টা ৯ মিনিটের দিকে দেশে দ্বিতীয় দিনের মতো ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, নেপালে কুদারির ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণে এ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভূমি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলে এর মাত্রা ছিলো ৬.৭।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ভূকম্পন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন আমি তাদের সাহস দিয়ে বলেছি, ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমার কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসেই অবস্থান করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ভূমিকম্পে সচিবালয় যাতে নিরাপদ থাকে সে বিষয়ে আমরা আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। ২০ তলার বিশিষ্ট ৬ নম্বর ভবনের সাততলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। তার সঙ্গে নেমে আসেন কর্মকর্তা কর্মচারীরাও।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে আমিও নেমে আসি। সবাই তাড়াহুড়ো করে নেমে আসেন। ৬ নম্বর ভবনের নয়তলা থেকে হেঁটে নেমে আসেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় তিনি অনেকটা হাঁপাতে থাকেন। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ কর্মকর্তারাও সিঁড়ি বেয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
শাজাহান খান বলেন, আমি সংবাদ সম্মেলন করে আমার মন্ত্রণালয়ের এডিপির সভা করছি। এ সময় হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তখন কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাড়াহুড়ো করে নামতে শুরু করে। মন্ত্রী বলেন, আমি দেখলাম এভাবে নামলে সবার মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। সে জন্য আমি সিঁড়ির নিচে দাঁড়ালাম। এরপরে নিচে নেমে আসি।
সাত নম্বর ভবনের ষষ্ঠতলা থেকে হেঁটে নামেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। ২০ তলা ভবনের ১৫ তলা থেকে হেঁটে নেমে আসা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বসে কাজ করছিলাম, হঠাৎ দেখি টেবিল দুলছে। পরে আতঙ্কে অনেকের মধ্যে আমিও পায়ে হেঁটে নেমে পড়ি। বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও পায়ে হেঁটে নেমে আসেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকার কারণে তিনি মন্ত্রণালয়ের আসেননি। তবে তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিচে নেমে আসেন।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, আমি মন্ত্রণালয়েই ছিলাম। তবে আমি নামিনি।
বিএ/আরআইপি