ইন্দোনেশিয়ার বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা আহ্বান


প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার বাজারে ১২৯টি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা চেয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যেকার বৈঠক শেষে এক যৌথ ইশতেহারে এ কথা বলা হয়। বৃহস্পতিবার বালাইসিদাং জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশ বাংলাদেশি পণ্যের কোটা ও শুল্কমুক্ত পণ্যের তালিকা পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে যে, কোন কোন পণ্যে এ ধরনের সুবিধা দেয়া হবে।

ইশতেহারে বলা হয়, দুই নেতা উভয় দেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে তা দমনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী বলেন, দুই নেতা বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে উভয় দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এবং জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহৎ এই দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ইশতেহারে আরও বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অধিকতর সুসংহত করার পাশাপাশি ব্যবসা ও বিনিয়োগ খাতের সম্প্রসারণের ওপর জোর দেন।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা ইন্দোনেশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রবেশাধিকার কামনা করেন।

দুই নেতা কৃষিখাতে সহযোগিতা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ওপর সমঝোতা স্মারক এবং ইন্দোনেশিয়ার রফতানি সংস্থা ও বাংলাদেশের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরে একমত হন। এতে বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা মুক্ত সুবিধারও অনুরোধ জানানো হয়।

যৌথ ইশতেহারে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, কৃষি, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, পর্যটন, বিজ্ঞান ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলা হয়, চলতি বছরের শেষে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে যৌথ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

প্রেসিডেন্ট উইদোদো দু’টি বিষয়ে শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষণ এবং ২০১৯-২০২০ সেশনের জন্য জাতিসংঘের অস্থায়ী আসনে ইন্দোনেশিয়ার প্রার্থিতার স্বপক্ষে বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন।

তিনি কয়লা, বিদ্যুৎ, তেল ও তৈরি পোশাক খাতে যৌথ সহযোগিতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন এবং ট্রেড কমিশনের নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরবর্তী বৈঠক যথাশিগগির সম্ভব আহ্বানের নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি খাত এবং এ খাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া সমুদ্র সম্পর্কিত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার বিষয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের জাহাজ তৈরির দক্ষতার ব্যবহার এবং সামুদ্রিক সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে তার সুবিধা মতো সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র সচিব এ কথা বলেন।

বৈঠকের পর ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের মধ্যে যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী এছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ড. রামি হামদাল্লাহ ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশিল কৈরালার সঙ্গে বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাওনাইন এবং মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) মুস্তাফিজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।