স্লো হয়ে গেছে এসএসসির উইকেট, বলের গতি মন্থর


প্রকাশিত: ০৯:৪৮ এএম, ০১ এপ্রিল ২০১৭

শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রসিদ্ধ ভেন্যু হলেও গত ছয় বছর কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে কোনো ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়নি। এই মাঠে সর্বশেষ ওয়ানডে হয়েছিল ২০১১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘদিন ওয়ানডে না হওয়ায় এ মাঠের উইকেটের চরিত্র খানিক অজানা হয়ে গেছে।

এ কারণেই দুই অধিনায়কই টসের পর বললেন আমি টস জিতে আগে ফিল্ডিং করতাম। উইকেটের গতি-প্রকৃতি আর চরিত্র সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে সেটাই স্বাভাবিক। তবে ইতিহাস জানাচ্ছে এই এসএসসিতে শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ২৭৭ রান করে জিতেছিল ২৬ রানে।

Babu

ওই দলের উপুল থারাঙ্গা আর থিসারা পেরেরাই শুধু আছেন আজকের লঙ্কান একাদশে। উইকেট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় মাশরাফি বিন মর্তুজাও প্রথাগত ধারা অনুসরণ করলেন। টস জিতে সঙ্গে সঙ্গে ফিল্ডিং বেছে নিলেন এবং বোলিংয়ে নেমে ২৮১ রানে লঙ্কানদের বেঁধে রাখতে পারলেন।

বাংলাদেশ অধিনায়ক হয়তো এ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারেন। আজকের খেলা নিয়ে তার গেম প্ল্যানের প্রথম অংশই ছিল উপুল থারাঙ্গার দলকে ২৮০’র মধ্যে বেঁধে রাখা। এ ম্যাচের আগে প্রেস কনফারেন্সে সে কথা বার কয়েক উচ্চারণও করেছিলেন টাইগার অধিনায়ক।

তবে তিনি যা ভেবে স্বাগতিকদের ২৮০’র মধ্যে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন, সে ধারণাটা শেষ পর্যন্ত থাকলে হয়! বলার অপেক্ষা রাখে না বাংলাদেশ শিবিরের ধারণা, এসএসসির পিচও হয়তো ডাম্বুলার রণগিরি স্টেডিয়ামের মতোই ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি হবে; কিন্তু আসলে কি তাই?

শ্রীলঙ্কার ইনিংসটা ভালোমতো লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, ইনিংসের মাঝামাঝি সময় থেকেই উইকেটের চরিত্র পাল্টাতে শুরু করে। শুরুতে যেটা ছিল পুরো ব্যাটিং সহায়ক, সেটাই সময় গড়ানোর সাথে সাথে স্লো হতে লাগলো।

Vision

একটি ছোট্ট পরিসংখ্যান উইকেটের চরিত্র নির্দেশ করবে- শ্রীলঙ্কার ১০০ রান এলো ১৭.৩ ওভারে। আর তাদের ২০০ করতে খেলতে হলো ৩৮.৪ ওভার। এই যে প্রথম ইনিংসের মাঝামাঝি সময় থেকে উইকেটের গতি কমে যাওয়া- সে আচরণ বহাল থাকলে কিন্তু চিন্তার কারণ।

বাংলাদেশ ইনিংসেও যদি উইকেট স্লো হতে থাকে তাহলে ২৮২ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া খুব কঠিন হতে পারে। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের আউট হবার ধরন লক্ষ্য করলেই পরিষ্কার হবে, বল যে ২৫ ওভারের পর থেকে দেরিতে ব্যাটে এসেছে।

থিসারা পেরেরার পাশাপাশি যে লঙ্কান শেষ দিকে বিপজ্জনকভাবে ব্যাট ছুড়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের বেকায় ফেলে দিতে পারেন, সেই গুনারত্নে মাশরাফির বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন শুধু বল তার প্রত্যাশার চেয়ে দেরিতে আসায়। তেড়েফুঁড়ে ব্যাট চালাতে গিয়ে আকাশে তুলে দিলেন গুনারত্নে।

এই যে উইকেটের গতি কমে যাওয়া, সেটা খুব ভালভাবে খেয়াল করলে হয়ত শ্রীলঙ্কাকে আরও ১৫/২০ রান কমে আটকে রাখা যেত। শেষ ১০/১৫ ওভার শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলতে যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়েছে।

খালি চোখে সেটা যতটা বাংলাদেশের বোলারদের বোলিং ক্যারিশমায়, তার চেয়ে বেশি উইকেটের গতি কমে যাওয়ায়। এ কারণেই প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৬, ইনিংসের অর্ধেক অংশে ২ উইকেটে ১৩২ করা দল শেষ ২০ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখেও তুললো ১২১ রান।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেও বল আসলো একটু থেমে। দেরিতে বল আসায় তামিমের ফ্ল্যাশ স্লিপ ফিল্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে গেল। তারপর তামিম উইকেটের গতি না ঠাউরে ড্রাইভ করতে গেলেন। বল আসলো তার ধারনার চেয়ে দেরিতে। রিটার্ন ক্যাচ হলো নুয়ান কুলাসেকেরার হাতে।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই উইকেটের গতি মন্থর। বল দেরিতে আসছে, এখানে ফ্রি স্ট্রোক খেলা আর তেড়েফুঁড়ে ব্যাট চালনা সহজ নয়। দেখে সেট হয়ে তারপর বিগ হিটে যেতে হবে- এ উপলব্ধি খুব দরকার। না হয় ২৮১‘ই হবে অনেক দুরের পথ।

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।