ক্ষমা চেয়ে ফিফাকে মেসির চিঠি


প্রকাশিত: ০৭:০৬ এএম, ৩১ মার্চ ২০১৭

চিলির বিপক্ষে ম্যাচের সময় সহকারী রেফারিকে নাকি মায়ের নাম ধরে গালাগালি দিয়েছিলেন মেসি। যে কারণে খেলোয়াড় আচরণবিধি লঙ্ঘণের দায়ে মেসিকে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ফিফা। তবে সহকারী রেফারি এমারসন কারভালহোকে কোনো বাজে মন্তব্য করেননি বলে দাবি করেছেন মেসি। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফিফার কাছে চিঠি লিখেছেন আর্জেন্টাইন এই তারকা ফুটবলার। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘অনাকাংখিতভাবে কিছু বলে ফেললেও এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’

বলিভিয়ার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার ০-২ গোরের হারের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফিফার কাছে ক্ষমা চাইলেন লিওনেল মেসি। বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফিফার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন মেসি। যে কারণে বলিভিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামতে পারেননি তিনি এবং আর্জেন্টিনাও হেরে গিয়ে পড়েছে মহা বিপদে। আগামী বিশ্বকাপে দলটি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে কি না, সেটাই পড়েছে এখন শঙ্কার মধ্যে।

আর্জেন্টিনার হেরে যাওয়া এবং আরও তিন ম্যাচ যদি খেলতে না পারেন, তাহলে উদ্ভূত পরিস্থির ভয়াবহতা চিন্তু করে রীতিমতো চিন্তিত মেসি চিঠি পাঠিয়ে দিলেন ফিফার কাছে। চিঠিতে মেসি লিখেছেন, ‘সেদিন মাঠে যা যা বলেছিলাম, তা একান্তই হতাশার বহিঃপ্রকাশ। কাউকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাইনি। পুরোটাই ছিল হাওয়ায় ভাসানো কথা। লাইন্সম্যানকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে চাইনি।’

আর্জেন্টিনার পক্ষ থেকে ফিফাকে আপিলের আবেদন তো হয়েছেই, মেসি নিজেও গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি লিখেছেন ফিফাকে। স্প্যানিশ ভাষায় ৯টি অনুচ্ছেদে লেখা ওই চিঠিতে মেসি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, ‘লাইন্সম্যানকে মৌখিক আক্রমণ করার যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে উঠেছে, তার তীব্র বিরোধিতা করছি আমি। বিশ্বাস করি না যে, আমার এই আচরণ ফিফার আচরণবিধির ৫৭ নম্বর ধারার অধীনে পড়ছে।’

শুধু এটুকুই নয়, বাকি চিঠি জুড়ে একের পর এক যুক্তি সাজিয়েছেন মেসি। যেখানে কেন তার এই শাস্তি পাওয়া উচিত নয়, তা ব্যাখ্যা করেছেন। মেসি লিখেছেন, ‘একজন লাইন্সম্যান, যিনি ব্রাজিলের নাগরিক, তিনি আমার কথা স্পষ্টভাবেই বুঝতে পারছিলেন না। এতটাই যে, মাঝে মাঝে আমরা বন্ধুর মতো কথাও বলছিলাম। তখন একবারও মনে হয়নি আমার কোনও কথা ওকে আঘাত করেছে। তবু যদি আমার কোনও কথায় তার আঘাত লেগে থাকে, যা আমি ইচ্ছে করে বলতে চাইনি, তা হলে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।’

মেসির এটাও অভিযোগ করেছেন যে, ফিফার কাছে যে ভিডিওটি পাঠানো হয়েছে, তা সম্পাদনা করা এবং মাঠের ঘটনা আদৌ সেরকম ছিল না। অপরদিকে সামনে এসেছে আরেকটি তথ্যও। আগেই জানা গিয়েছিল, ম্যাচ রেফারি লারিওন্দা সেদিন নিজের রিপোর্টে গালাগালির ঘটনা উল্লেখ করেননি।

কিন্তু আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র ‘ওলে’ আঙুল তুলেছে কনমেবল-এর রেফারি অ্যাসোসিয়েশন এবং কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের সভাপতি উইলসন সেনেমের দিকে। তাদের দাবি, উইলসন নাকি লারিওন্দার রিপোর্ট দেখার পরই তাকে চাপ দিতে থাকেন মেসির ওই ঘটনা রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। পাশাপাশি উইলসন জানান, ফিফাকে সংশ্লিষ্ট ভিডিও পাঠানোর ব্যবস্থা তিনিই করবেন। লারিওন্দা কথামতো ওই লাইন্সম্যান এমারসনের অভিজ্ঞতার কথা রিপোর্টে ঢুকিয়ে দেন। এমারসন আবার পরে জানিয়েছেন, মাঠে মেসির কোনও কথা তিনি বোঝেননি। টিভি দেখে তার মনে হয়েছে, মেসি তাকে গালি দিয়েছেন!

মেসির এই চিঠি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ফুটবলবিশ্বে। ব্রিটিশ মিডিয়ার মতে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনের পরামর্শেই হয়তো এই পদক্ষেপ নিয়েছেন মেসি। কারণ আর্জেন্টিনা কোচ এদগার্দো বাউজার আশঙ্কা, বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের মতো  মেসিকে ছাড়া বাকি তিনটা ম্যাচ জেতাও আর্জেন্টিনার জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।