চান্দিমালই মানছেন ‘শ্রীলঙ্কা অনভিজ্ঞ ও অপরিপক্ক দল’


প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ২৭ মার্চ ২০১৭

শ্রীলঙ্কান সাংবাদিকরা প্রেস কনফারেন্সে এমনিতে খুব বেশি প্রশ্ন করেন না। হাতে গোনা দু`তিনটি প্রশ্ন হয় ইংরেজিতে। তারপর সিংহলিজ ভাষায় অল্প কয়েকটি প্রশ্ন দিয়েই খেলার আগের দিনের ও ম্যাচ ডে‘র প্রেস মিট শেষ। কিন্তু ২৫ মার্চ রাতে হল তার ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের কাছে হারের পর অনেকটা সময় প্রেস কনফারেন্সে কাটলো দিনেশ চান্দিমালের।

Babuএ লঙ্কান ব্যাটসম্যান কাম কিপার তার স্বদেশী সাংবাদিকের প্রশ্নবাণে রীতিমত জর্জরিত হলেন। তার নিজের পারফরমেন্স মন্দ ছিল না। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রান তারই করা। তাই তিনি আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন না। কিন্তু তারপরও শ্রীলঙ্কার পরাজয় এবং পারফরমেন্স নিয়ে স্বদেশী প্রচার মাধ্যমের নানা তীর্যক প্রশ্ন মুখোমুখি তাকেই হতো হলো।

অন্যদিন যেখানে সর্বোচ্চ তিন থেকে চারটে প্রশ্ন হয়, ঐ দিন অন্ত ১২ থেকে ১৪ টি প্রশ্ন হল। ভাষা সমস্যার কারণে তা বোঝা না গেলেও এক লঙ্কান বন্ধু প্রতিম সাংবাদিক জানালেন, আমরা শ্রীলঙ্কার কমজোরি বোলিং, ফিল্ডিং ব্যর্থতা আর টপ অর্ডারের বাজে পারফরমেন্স নিয়েই প্রশ্ন করেছি। তাদের বেশির ভাগ প্রশ্নের সারমর্ম হলো এত দূর্বল ও কম জোরি বোলিং আর এমন বাজে ফিল্ডিং তারা বহুদিন দেখেননি।

এক পর্যায়ে চান্দিমাল অসহায় কণ্ঠে বলেই ফেললেন, ‘আসলে আমাদের বর্তমান দলটি এক ঝাঁক তরুণে গড়া। আমরা এখন একটা অন্যরকম সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। যেখানে এক ঝাঁক তরুনে ঘেরা দলকে আবার ঘষে মেজে তৈরি করা হচ্ছে।’

Vision

চান্দিমালের কথাগুলো একটু মন দিয়ে লক্ষ্য করুন। বিশেষ করে শেষ লাইনটি। এখানে একটা অস্ফুট অসহায় ভাব ফুটে উঠেছে। লঙ্কান টিমের সেরা ব্যাটসম্যান আকার ইঙ্গিতে মেনেই নিলেন, তারা যে দল নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছেন সেটা তুলনামূলক দুর্বল ও কমজোরি। অর্থাৎ চান্দিমাল বোঝাতে চাইলেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান দলটি আগের দলগুলোর মত অত সমৃদ্ধ নয়। দলে অভিজ্ঞ ও পরিণত পারফরমারের সংখ্যা কম। অপরিণত ও অপরিপক্ক পারফরমার বেশি।

সত্যিই তাই। উপল থারাঙ্গার নেতৃত্বে যে দলটি ওয়ানডে সিরিজ খেলছে, তাতে একজন মাহেলা, সাঙ্গাকারা, তিলকারত্নে দিলশান কিংবা অ্যাঞ্জোলো ম্যাাথিউজ কি আছে? নেই। যারা আছেন, তারা খুব খারাপ এমন নয়। তবে মানে ও অভিজ্ঞতায় অনেকদূর পিছিয়ে।  চান্দিমাল, উপল থারাঙ্গা যার কথাই বলা হোক না কেন, তারা কেউই তিলকারত্নে দিলশান, সাঙ্গাকারা কিংবা মাহেলা মানের নন।

টেস্ট হলে ভিন্ন কথা ছিল। কুশল মেন্ডিস আর দিনেশ চান্দিমাল যথার্থই টেস্ট ব্যাটসম্যান। তাদের লম্বা সময় উইকেটে থাকার ক্ষমতা আছে। দীর্ঘ ইনিংস খেলার সামর্থ্যও আছে। কিন্তু ওয়ানডেতে তারা কেউই দিলশান, সাঙ্গাকারা আর মাহেলা জয়বর্ধনের স্পেশালিষ্ট ওয়ানডে পারফরমার নন।

একই ভাবে থিসারা পেরেরাও অ্যাঞ্জোলো ম্যাথিউসের মত ম্যাচ উইনার নন। লাকমাল, লাহিরু আর লক্ষণ সান্দাকান, যার কথাই বলা হোক না কেন, তারা কেউই চামিন্দা ভাস, লাসিথ মালিঙ্গা কিংবা রঙ্গনা হেরাথে মত ম্যাচ ভাগ্য গড়ে দেয়ার মত না। মোদ্দা কথা, বাংলাদেশ যতবার শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে, এবারের ওয়ানডে দলটি সবচেয়ে কমজোরি। দলে এমন একজন পারফরমার নেই, যিনি একা বাংলাদেশকে হারিয়ে দিতে পারেন।

এআরবি/এমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।