মিরাজের অন্তর্ভুক্তিতেই `আদর্শ` কম্বিনেশন হয়েছে


প্রকাশিত: ০৮:১১ এএম, ২৭ মার্চ ২০১৭

সিরিজ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে মেহেদী হাসান মিরাজের নাটকীয় অন্তর্ভুক্তি! তা নিয়ে কিছু কথা। গুঞ্জন। মিরাজকে নেয়া নিয়ে তেমন নেকিবাচক কথা হয়নি। বরং অনেকেরই মত দেশের সেরা অফস্পিনার হিসেবে এমনিতেই দলে থাকার সামর্থ্য আছে মিরাজের। স্পেশালিষ্ট অফস্পিনার হিসেবে বিশ্বের অন্যতম সেরা বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে স্লো ট্র্যাকে থাকার সব রকম যোগ্যতাও আছে।

Babuতবে তাকে টেস্ট সিরিজ শেষে দেশে ফেরত পাঠানোর পর আবার নেয়া নিয়েই আসলে সমালোচনা। এই দলে মিরাজ জায়গা পান না, কিংবা মিরাজকে নিলে টিম কম্বিনেশন ভালো, খারাপ হয়, এমন কথা ওঠেনি । এমন বলার আসলে কোন সুযোগই নেই। কথা উঠেছে, কেন মিরাজকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে আবার শেষ মুহূর্তে অনেক নাটকের পর দলে নেয়া? এর চেয়ে আগে ভাগে চিন্তা করে তাকে ওয়ানডে স্কোয়াডে রেখে দেয়া যেত না? সেটাই যুক্তি যুক্ত হত না।

সেটাই যে ক্রিকেটীয় যুক্তি ও দর্শনে ঠিক ছিল, তার প্রমাণ মিললো ২৫ মার্চ এই ডাম্বুলার রনগিরি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে। শনিবার রনগিরি স্টেডিয়ামে মিরাজের অন্তর্ভুক্তিতেই বদলে গেছে টিম বাংলাদেশের চেহারা। কন্ডিশন একটু স্লো। এরকম কন্ডিশনে সাকিবের সঙ্গে একজন স্পেশালিষ্ট স্পিনারতো খেলবেনই।

যেহেতু লঙ্কান একাদশে চার চারজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান বাঁহাতি, নিচের দিকেও আছেন আরও দুজন, এই এতগুলো বাঁহাতির বিরুদ্ধে একা সাকিবই যথেষ্ঠ।

Vision

তার মেধা, প্রজ্ঞা, ক্রিকেট বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা দিয়ে যা করার করবেন। সঙ্গে একজন অফস্পিনার থাকলে একদম রাজ যোটক হতো। মিরাজ আসায় সেটাই হয়েছে। কোন ঘাটতি ও দুর্বলতা নেই। বোলিং ডিপার্টমেন্ট আগের চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল। বৈচিত্রও বেড়েছে।

ওদিকে ওয়ানডে অভিষেকেই বাজিমাৎ মিরাজের। টেস্ট অভিষেকের মত ৫ উইকেট হয়ত পাননি। কিন্তু তার বোলিং দলের শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটাই। তামিম ইকবালের ভাষায়, ‘উইকেট তত সহজ নয়। বল পরে একটু থেমে আসে। একটু টার্নও হয়।’

এরকম উইকেটে দুই বাঁহাতি লঙ্কা ওপেনার থারাঙ্গা ও দানুষ্কা গুনাথিলকার বিরুদ্ধে নতুন অফব্রেক বোলার মিরাজকে দিয়ে নতুন বলে বোলিং করানোর গুরুত্বপূর্ণ কাজটিও সাড়লেন অধিনায়ক মাশরাফি। ১০ ওভারে ৪৩ রানে ২ উইকেট দখল করা মিরাজ প্রথম স্পেলে লঙ্কান ওয়ান ডাউন কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে অধিনায়কের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিদানও দিলেন।

তাদের বিরুদ্ধে দেশ সেরা অফস্পিনার মিরাজকে খেলানো যে ঠিক হয়েছে, তার বোলিং ফিগারই সে সত্য জানান দিচ্ছে। কাজেই মিরাজকে ধরে শেষ পর্যন্ত যে দলটি প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছে, সেটা এ পরিবেশ ও প্রতিপক্ষের আলোকে খুবই কার্যকর একাদশ। অনেকে এটাকে সাম্প্রতিক সময় ও নিকট অতীতের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে গোছানো, সুবিন্যস্ত ও কার্যকর দল বলেও মন্তব্য করেছেন।

বাংলাদেশের লাইন আপটা একবার পাখির চোখে পরখ করে দেখুন। দেখবেন শনিবার ডাম্বুলার রনগিরি স্টেডিয়ামে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে যে ১১ জন মাঠে নেমেছিল, সেটা নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সেরা ওয়ানডে দল। একদম আদর্শ একাদশ।

এআরবি/এমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।